প্রতি মাসেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতাদের বিশেষ ট্রেনে চড়তে হয়। গন্তব্য থাকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস থেকে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ। গতকাল সোমবারও ছিল এই যাত্রা। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার আগে ট্রেন এক জায়গায় থেমে যায়। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে চমকে ওঠেন আইনপ্রণেতারা। সবাই হতবাক, এ কোথায় এলেন! তবে কয়েক মিনিটেই এ রহস্য ভেদ হয়। ট্রেনটি স্ট্রাসবার্গে না গিয়ে চলে গেছে প্যারিসের ডিজনিল্যান্ডে। আর বাইরে তখন বিগ থান্ডার মাউন্টেইন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের শতাধিক সদস্য ও তাঁদের সহযোগীরা থিম পার্কের ওই সৌন্দর্য বেশ উপভোগ করেছেন।
ব্রাসেলস থেকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বেশির ভাগ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও স্ট্রাসবার্গে তাদের সদর দপ্তর। সেখানে প্রতি মাসে চার দিনের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন থাকে। আর সেই অধিবেশনে যোগ দিতে যেতে হয় আইনপ্রণেতাদের।
ট্রেনে থাকা একজন পার্লামেন্টারি প্রেস কর্মকর্তা ইমানুয়েল ফাউলোন মজার টুইট করেন। তিনি লিখেছেন, ‘যেখানে জীবনে জাদু আসে’—ডিজনির এই স্লোগান কি শিগগিরই ইউরোপীয় পার্লামেন্টের স্লোগান হতে যাচ্ছে? ট্রেনটি তখন পার্কের কাছে মার্নে-লা-ভালি-চেসি স্টেশনে দাঁড়িয়ে।
অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইট পলিটিকো জানতে চেয়েছে, ‘এটা কি মিকি মাউস পার্লামেন্ট?’
অনেকে আবার টুইট করেছেন, এই ভুলের মাধ্যমে যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতাদের ব্রাসেলসেই থাকা উচিত এবং প্রায় চার ঘণ্টার নিয়মিত এই ট্রেনযাত্রা বন্ধ করা উচিত।
ডেনমার্কের আইনপ্রণেতার প্রেস সহকারী পেলে গিটসেন মজা করে বলেছেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ব্রাসেলসে থিতু হলে স্ট্রাসবার্গ ভবনগুলো কি নতুন ডিজনিল্যান্ড হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে? এ দিয়ে নতুন ডিজনি চলচ্চিত্রও হতে পারে। যেমন ‘একটি ট্রেন ও পার্লামেন্ট, যারা অবকাশে যেতে চায়।’
যত মজাই হোক, আসলে ট্রেনটি কেন প্যারিসে গেল, সেই ব্যাখ্যা দিয়েছে ফ্রান্স রেলওয়ে প্রতিষ্ঠান এসএনসিএফ। প্রতিষ্ঠানটি এএফপিকে বলেন, ট্রেনটি সব মিলিয়ে ৪৫ মিনিট দেরি করেছে। একটি ট্র্যাক সিগন্যালিং ত্রুটির কারণে এটি আন্তসংযোগকারী লাইনে না গিয়ে প্যারিসের দিকে চলে যায়। পরে অবশ্য ট্রেনটিকে স্ট্রাসবার্গ ট্র্যাকে নিয়ে আসা হয়।