ইরানি নারীদের সমর্থনে পার্লামেন্টে চুল কাটলেন তিনি

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় আবির আল-সাহলানি তাঁর চুল কাটেন
ছবি: রয়টার্স

ইরানের বিক্ষোভরত নারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে নিজের চুল নিজেই কেটেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সদস্য (এমপি)। খবর এএফপির।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই সদস্যের নাম আবির আল-সাহলানি। ইরাকি বংশোদ্ভূত এই নারী ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সুইডিশ সদস্য।

গতকাল বুধবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভাষণ দেন আবির। দাঁড়িয়ে ভাষণের শেষ দিকে তিনি তাঁর খোঁপা খুলে কাঁচি দিয়ে চুল কাটেন।

চুল কাটার আগে আবির তাঁর ভাষণে বলেন, ‘ইরান মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ক্ষোভ নিপীড়কদের চেয়ে বড় হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ইরানের নারীরা মুক্ত হবেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি।’

আবির  আরও বলেন, ‘আমরা, ইইউর জনগণ-নাগরিকেরা ইরানে নারী-পুরুষের বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা কোনো ধরনের শর্ত ছাড়া অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।’

তেহরানের বিরুদ্ধে ইইউর ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান আবির।

আবিরের ভাষণ ও চুল কাটার ভিডিও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা হয়েছে। তিনি তাঁর ফেসবুকেও এই ভিডিও দিয়েছেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, আবির তাঁর কাটা চুলের গোছা হাত দিয়ে ধরে ওপরের দিকে তুলে ধরেছেন। এ সময় তিনি উচ্চ স্বরে বলেন, ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা!’

আবির আল-সাহলানি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনে ইরানের নারীদের পক্ষে অবস্থান নিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলকে অভিযুক্ত করেছেন আবির।

আবির বলেন, এখন কথা বলার সময়। এখন কাজ করার সময়। ইরানের শাসকদের হাত রক্তে রঞ্জিত।

জোসেফ বোরেল বলেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন চালানোর জন্য ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা প্রস্তুত করছে ইইউ।

পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ ঠেকাতে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভে দমন-পীড়নের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩৩ জন নিহত হয়েছেন। শত শত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হিজাবনীতি ভঙ্গ করার অভিযোগে দেশটির নীতি পুলিশ মাসাকে আটক করেছিল। পুলিশি হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অস্থির পরিস্থিতিতে মাসার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।