তুরস্কে গতকাল সোমবার আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটির ঐতিহাসিক গাজিয়ানতেপ দুর্গ আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্কের হুরিয়েত ডেইলি নিউজ এই তথ্য দিয়েছে।
একই ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি হয়। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
গতকালের এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৪ হাজার ৮৯০ জন মানুষ নিহত হয়েছে। তার মধ্যে শুধু তুরস্কেই নিহত হয়েছে ৩ হাজার ৩৮১ জন। সিরিয়ায় নিহত দেড় হাজার। উভয় দেশে হাজারো মানুষ আহত হয়েছে। ভূমিকম্পে উভয় দেশে ধসে পড়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে। উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়তে পারে।
গাজিয়ানতেপ দুর্গটি তুরস্কের গাজিয়ানতেপের শাহিনবে জেলায় অবস্থিত। খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পে দুর্গটির কিছু অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গের ধ্বংসাবশেষ রাস্তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
কালো পাথর দিয়ে তৈরি দুর্গের কিছু দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গের চারপাশের প্রাচীরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রোমান আমলে দুর্গটি পর্যবেক্ষণকাজে ব্যবহৃত হতো। ঐতিহাসিক দুর্গটি অনেকবার সংস্কার-পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ভূমিকম্পে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পোর একটি বিখ্যাত দুর্গসহ দেশটির বেশ কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
সিরিয়ার প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলেপ্পোর বিখ্যাত ঐতিহাসিক দুর্গটির ভেতরের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। এ ছাড়া দুর্গের উত্তর-পূর্ব দিকের প্রতিরক্ষা দেয়ালের কিছু অংশে ফাটল ধরেছে, কিছু অংশ পড়ে গেছে।
সিরিয়ার প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দুর্গের অভ্যন্তরে থাকা আইয়ুবিদ মসজিদের মিনারের গম্বুজের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। দুর্গের প্রবেশদ্বারটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আলেপ্পো শহরটি তার প্রাচীন দুর্গ, ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক স্থান, শতাব্দী-পুরোনো ছাদ আচ্ছাদিত বাজারের জন্য বিখ্যাত।