যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় ক্রমে বেগবান হচ্ছে। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই দৌড়ে এগিয়ে থাকা ঋষি সুনাককে ছাড়া অন্য যে কাউকে সমর্থন দিতে মিত্রদের বলেছেন। গতকাল শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যম এমন দাবি করেছে। খবর এনডিটিভির।
বরিস ৭ জুলাই ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। টরিদের নেতৃত্বের লড়াইয়ের ভোটাভুটিতে ইতিমধ্যে বাদ পড়ে যাওয়া প্রার্থীদের সাবেক অর্থমন্ত্রী সুনাককে সমর্থন না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, নিজ দলের সদস্যদের মধ্যে বরিসের সমর্থন হারানোর জন্য সুনাককেই বেশি দায়ী করা হচ্ছে।
বরিস বলে আসছেন, নেতৃত্বের লড়াইয়ে কোনো প্রার্থীকে তিনি সমর্থন দেবেন না কিংবা এই প্রতিযোগিতায় তিনি প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে মনে করা হচ্ছে, নেতৃত্বের লড়াইয়ে ইতিমধ্যে বাদ পড়ে যাওয়া প্রার্থীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তাঁদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত হবে না।
এ ধরনের একটি আলাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাসকেই নেতা হিসেবে পেতে বেশি আগ্রহী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রিসভায় বরিসের কড়া সমর্থক জ্যাকব রেস-মগ ও নাদিন ডরিস।
এ ছাড়া জুনিয়র বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মরডেন্টের বিষয়েও উদার বরিস। তিনি চান, সুনাকের পরিবর্তে মরডেন্ট তাঁর উত্তরসূরি হোন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বরিস ও তাঁর শিবির ‘ঋষি ছাড়া যে কেউ’ এমন গোপন প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগে তাঁরা নিজেদের প্রতারিত ভাবছেন। সুনাককে অনুসরণ করে পদত্যাগের হিড়িক শুরু হলে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বরিসের বিদায় ত্বরান্বিত হয়।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘১০ নম্বরের (ডাউনিং স্ট্রিট) পুরো টিম ঋষিকে অপছন্দ করেন। এটা ব্যক্তিগত। এটা গায়ে জ্বালা ধরানোর মতো। তাঁকে (বরিস) টেনে নামানোর জন্য তাঁরা সাজিদ জাভিদকে দায়ী করছেন না। তাঁরা ঋষিকেই দায়ী করছেন। তাঁদের ধারণা, তিনি কয়েক মাস ধরে এই পরিকল্পনা করছিলেন।’
কনজারভেটিভ পার্টির (টরি) পার্লামেন্ট সদস্যদের (এমপি) ভোটাভুটিতে প্রথম দুই রাউন্ডে বিজয়ী হয়েছেন ঋষি সুনাক । সাপ্তাহিক ছুটিতে তিনি বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ধারাবাহিক টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেবেন। তারা হলেন জুনিয়র বাণিজ্যমন্ত্রী পেনি মরডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস, সাবেক মন্ত্রী কেমি ব্যাডেনখ ও টরি ব্যাকবেঞ্চার টম টুগেনহাট।
তবে ‘ঋষি ছাড়া অন্য যে কাউকে’ বিজয়ী হিসেবে বরিস চাচ্ছেন—এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁর এক মিত্র। অবশ্য তিনি স্বীকার করেছেন, বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সুনাকের ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ জন্য বিরক্তি পোষণ করেছিলেন।
এদিকে টরি এমপিদের বাইরে সুনাকের সমর্থন বিস্তৃত নয় বলে যে কথা উঠেছে, সেটাকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না তাঁর শিবির। সুনাকের সমর্থক টরি ব্যাকবেঞ্চ এমপি রিচার্ড হোল্ডেন বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনি আসলেই সবাইকে যুক্ত করতে পারবেন। আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।’
রিচার্ড হোল্ডেন আরও বলেন, ‘কনজারভেটিভদের ওপর কনজারভেটিভদের আক্রমণের চেয়ে বরং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারব। এ ধরনের আক্রমণ সত্যিকারভাবে আমি পছন্দ করি না।’