যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ এমপি স্যাম কার্লিং
যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ এমপি স্যাম কার্লিং

যুক্তরাজ্যে সর্বকনিষ্ঠ পার্লামেন্ট সদস্যের বয়স কত

যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে সবচেয়ে কম বয়সে জয়ী হয়েছেন স্যাম কার্লিং। ২২ বছর বয়সী কার্লিং কনজারভেটিভ পার্টির অভিজ্ঞ এক রাজনীতিবিদকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন। বয়স নয়, বরং তাঁর কাজ নিয়েই বেশি আলোচনা হবে—এমনটাই আশা করছেন ২০০২ সালে জন্ম নেওয়া এই তরুণ পার্লামেন্ট সদস্য।

যুক্তরাজ্যে সুস্থ-স্বাভাবিক কারও বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হলে সেই ব্যক্তি পার্লামেন্ট ও স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। ২০০৬ সালের আগপর্যন্ত অবশ্য সর্বনিম্ন বয়স ছিল ২১ বছর। ওই বছর নির্বাচনী প্রশাসনিক আইন পরিবর্তন করে বয়স ১৮ বছর করা হয়।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘হাউসের শিশু’ বলে ডাকা হয়। এবার ‘হাউসের শিশু’ কার্লিং নর্থ ওয়েস্ট কেমব্রিজশায়ার আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। মাত্র ৩৯ ভোটে কনজারভেটিভ পার্টির অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ শৈলেশ ভারাকে হারিয়েছেন তিনি।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্নাতক নিজের বিজয়কে ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্প’ বলে মন্তব্য করেছেন। কার্লিং আশা করেন, ভবিষ্যতে আরও বেশি তরুণ  নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ‘এতে করে তাঁরা পার্লামেন্ট ও স্থানীয় কাউন্সিল—উভয় জায়গায় নিজেদের প্রতিনিধিত্ব দেখতে পাবেন। এটা (তরুণদের প্রতি) উদাসীনতা কমাতে সহায়তা করবে।’

আগের ‘হাউস শিশু’ ছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্নাতক। কিয়ার মাথার নামের ওই পার্লামেন্ট সদস্যও লেবার পার্টির। ২০২৩ সালের উপনির্বাচনে তিনি সেলবি অ্যান্ড অ্যানস্টি আসন থেকে জিতেছিলেন।

কেমব্রিজের কাউন্সিলর কার্লিং বলেন, ‘আমি নির্বাচন করছি, এটা জেনে অনেক ভোটার অবাক হয়েছেন। কিন্তু বেলা শেষে তাঁরা ছিলেন বেশ ইতিবাচক। তাঁরাই বলেছেন, এটা তো বেশ ভালো। (রাজনীতিতে) আমাদের আরও বেশি তরুণ দরকার।’

মাত্র ২২ বছর বয়সে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের সদস্য নির্বাচিত হলেও বয়স নিয়ে বেশি ভাবতে চান না কার্লিং। লেবার পার্টির তরুণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘আমি চাই, তরুণদের বয়স নিয়ে মানুষের অদ্ভুত মানসিকতার অবসান হোক। আমি যতটা জানি, আমরা অন্য দশজনের মতোই। আমি আমার দায়িত্বটাই ঠিকঠাক পালন করতে চাই।’

রাজনীতির প্রতি নিজের সম্প্রতি আগ্রহ জন্মেছে জানিয়ে কার্লিং বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলে তাঁর মনে হয়।

উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের গ্রামীণ শহরে বেড়ে ওঠা কার্লিং নিজের এলাকাকে ‘অত্যন্ত বঞ্চিত অঞ্চল’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমার চারপাশে আমি অনেক কিছুর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে দেখেছি। আমার এলাকায় আমি দোকান বন্ধ হয়ে যেতে দেখেছি। অথচ তা একসময় বেশ বিকাশমান ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা পরিত্যক্ত অঞ্চলে পরিণত  হয়েছে।’

কার্লিং আশা করেন, তাঁর দল দাঁতের চিকিৎসকের সংকট, জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার (এনএইচএস) কর্মীসংকট ও গ্রামীণ পরিবহন সমস্যার সমাধানে কাজ করবে।

লেবার পার্টির তরুণ এই পার্লামেন্ট সদস্যের আশা, ‘আমরা (লেবার পার্টি) বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারব। আরও বেশি তরুণকে রাজনীতিতে আনতে পারব।’