ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যে ‘উত্তপ্ত পরিস্থিতি’ দেখা দিয়েছে, তাতে ইতি টানতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সহায়তা চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গতকাল শুক্রবার তিনি বলেন, ন্যাটো যদি ইউক্রেনে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলো ন্যাটোর আওতায় নিয়ে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানা যাবে।
প্রায় তিন বছর ধরে চলছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এই সময়টাতে দেশটির এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চল দখল করেছে রাশিয়া। জেলেনস্কির ভাষ্যমতে, ন্যাটো যদি ইউক্রেনের বাকি অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং যুদ্ধ থামানোর আশ্বাস দিয়ে কোনো চুক্তি করে, তাহলে রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চলগুলো মুক্ত করার চেষ্টা করবেন তিনি।
সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে হামলার হুমকি দিয়েছেন। ইউক্রেনের জ্বালানি খাত লক্ষ্য করেও ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। রাশিয়ার ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে মস্কো।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা যদি যুদ্ধের এই উত্তপ্ত পর্যায়ের ইতি টানতে চাই, তাহলে ইউক্রেনে আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলো ন্যাটোর সুরক্ষাবলয়ের ভেতরে আনতে হবে। এটাই আমাদের প্রথমে করতে হবে। এরপর কূটনৈতিকভাবে ইউক্রেনে অন্য অঞ্চলগুলো ফিরে পাব আমরা।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা পেয়েছে কিয়েভ। তবে গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়লাভের পর এই সহায়তা কতটা জারি থাকবে, তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্প তৎপর হবেন বলেও তাঁর অতীত নানা বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
বাইডেন ইউক্রেনকে যে সামরিক সহায়তা দিচ্ছেন, কংগ্রেসে তার কড়া সমালোচনা করে আসছে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল। এই সহায়তা জারি রাখার পক্ষে নয় তারা। ট্রাম্পও বলেছেন, ক্ষমতায় বসার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ থামাতে পারবেন তিনি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বন্ধের চুক্তিতে যেতে রাজি ক্রেমলিনও।
সূত্রের বরাতে রয়টার্সের করা ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে নিজেদের দখলে থাকা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চল রাশিয়ার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাইবে মস্কো। গণভোটের মাধ্যমে আগেই অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে তারা। তবে শান্তির বিনিময়ে মস্কোর এমন কোনো দাবি মেনে নেবেন না বলে আগে থেকেই বলে আসছেন জেলেনস্কি।