পশ্চিমা বিশ্বের নিয়ন্ত্রণের বাইরে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গতকাল মঙ্গলবার দুই যুগের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটিতে সফরে যাওয়ার আগে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন।
গতকাল উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপত্র রোদোং সিনমুন-এ প্রকাশিত এক চিঠিতে পুতিন দেশটির প্রতি অবিচল সমর্থনের অঙ্গীকার করেন। এই সফরে ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে তিনি আরও সহযোগিতা চাইতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকালই দুই দিনের সফরে পুতিনের উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে পৌঁছানোর কথা। তাঁর সফর ঘিরে শহরটিতে ছিল নানা আয়োজন। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ও বিভিন্ন স্থাপনায় ওড়ানো হয় উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার পতাকা। সড়কদ্বীপে পুতিন ও উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের ছবি টানানো হয়। বিলবোর্ডে শোভা পাচ্ছে পুতিন ও কিমের বিশাল ছবি।
চিঠিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সমতা, পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার ভিত্তিতে গত ৭০ বছর দুই দেশ ভালো সম্পর্ক ও অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছে। তিনি লেখেন, ‘পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণের বাইরে আমরা বাণিজ্য ও পারস্পরিক মীমাংসার জন্য বিকল্প পদ্ধতি গড়ে তুলব। একসঙ্গে মিলে অবৈধ একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রতিহত করব।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘একই সময়ে আমরা ইউরেশিয়ায় একটি সমতাভিত্তিক ও অবিচ্ছেদ্য নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলব।’
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানে সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় উত্তর কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানান পুতিন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও সামরিক হুমকি সত্ত্বেও পিয়ংইয়ংকে নিজের স্বার্থ সুরক্ষার প্রচেষ্টায় সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এবং মস্কোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে একাধিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এসব নিবন্ধে এ সামরিক অভিযানকে ‘সব রুশ নাগরিকের পবিত্র যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সিতে (কেসিএনএ) প্রকাশিত মতামতধর্মী এক লেখায় বলা হয়, ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থ সুরক্ষায় রাশিয়ার সরকার ও জনগণের সংগ্রামে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতির মাধ্যমে সব সময় পাশে থাকবে কোরিয়ার জনগণ।’
পুতিনের সফরের বিষয়টি দুই দেশের সরকারি পর্যায় থেকে নিশ্চিত করার পরদিন এ নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, পুতিনের সফরকালে একটি অংশীদারত্ব চুক্তি সই করতে পারে দুই দেশ। এতে নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ও থাকতে পারে।