ফ্রান্স সফর স্থগিত করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। অবসর নীতিমালা পরিবর্তন নিয়ে ফ্রান্সে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতিতে রাজার এই সফর নিয়ে আগেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।
ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর অনুরোধে সফর স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রোববার থেকে এই সফর শুরু হওয়ার কথা ছিল।
ব্রিটিশ রাজা হিসেবে ফ্রান্স সফর ছিল চার্লসের প্রথম বিদেশ সফর। সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার প্রতিবাদে ফ্রান্স জুড়ে বিক্ষোভ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বর্দো শহরের পৌর ভবনের বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। সফরের অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গলবার চার্লসের এই শহরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ওই দিন বিক্ষোভকারীরাও নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
বাকিংহাম প্রাসাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের চলমান পরিস্থিতির কারণে রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর স্ত্রী কুইন কনসর্ট ক্যামিলার তিন দিনের এই সফর স্থগিত করা হয়েছে। তাদের আশা অচিরেই রাজা তাঁর এই সফরের উপযুক্ত সময় খুঁজে পাবেন।
গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার পরিকল্পনা হয় এবং পার্লামেন্টে কোনো ধরনের ভোটাভুটি ছাড়াই এ সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে তিন মাস ধরে ফ্রান্সের রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে।
গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নেয়। ওই দিন রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে এ সংঘর্ষ হয়। ফ্রান্স সরকারের প্রস্তাবিত অবসর নীতিমালার বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে এটি ছিল সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। এ দিন কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ১০ লাখ ৮৯ হাজারের মতো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। শুধু প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার মানুষ। গত জানুয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এটি ছিল রাজধানী শহরটিতে সবচেয়ে বড় জমায়েত। তবে দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছিলেন ৭ মার্চের বিক্ষোভে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই দিন বিভিন্ন জায়গায় মোট ১২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।