উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে দেশটির সেনাদের বিরুদ্ধে বড় অগ্রগতি পেয়েছে রুশ বাহিনী। যুদ্ধের সম্মুখসারি থেকে এ অঞ্চলের অন্তত ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে তারা। এ ছাড়া সম্মুখসারিতে ইউক্রেনের কামানগুলোকে লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ।
খারকিভে চলতি মাস থেকে হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। এ অঞ্চলের ১২টি গ্রাম দখলের দাবি করেছে তারা। খারকিভের গভর্নর ওলেগ সিনেগুবোভ গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, খারকিভের সীমান্তবর্তী গ্রাম লিপৎসির কাছে পৌঁছেছেন রুশ সেনারা। ভভেচানস্ক শহর দখলের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এই মুহূর্তে ইউক্রেন বাহিনীর মূল লক্ষ্যটা হলো এ অঞ্চলে যুদ্ধের সম্মুখসারিতে স্থিতিশীলতা আনা।
তবে খারকিভের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আজ শুক্রবার দেশটির একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, খারকিভের ১০ কিলোমিটার ভেতরে অগ্রসর হয়েছে রুশ বাহিনী। এর বেশি তারা এগোতে পারেনি। ইউক্রেনের সেনাসদস্যরা রুশ বাহিনীকে থামিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে চীন সফরে গিয়ে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে খারকিভ প্রসঙ্গ তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, খারকিভ শহর দখল করাটা মস্কোর বর্তমান পরিকল্পনায় নেই। এই অঞ্চলে রুশ সেনারা অভিযান চালিয়ে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য একটি বেসামরিক এলাকা তৈরি করতে চাচ্ছেন। আর তা পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছে।
মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের ৯ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত ইউক্রেনের ২৭৮ বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে মস্কো। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পর ইউক্রেনে চালানো একক কোনো অভিযানে এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সাফল্য। ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলেও অগ্রগতি পাওয়ার দাবি করেছে রুশ বাহিনী।
এদিকে রাশিয়ার দক্ষিণ অঞ্চল, ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ও কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে ইউক্রেন ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে আজ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ হামলায় এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আগুন ধরে গেছে একটি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারে। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনের ছোড়া এসব ড্রোনের শতাধিক আকাশে থাকতেই ধ্বংস করেছে তারা।