ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ডকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। খবর এএফপির
‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে রেভল্যুশনারি গার্ডকে তালিকাভুক্ত করা হবে কি না, তা যাচাই–বাছাই করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মানি। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক গতকাল রোববার এ কথা বলেন।
নীতি পুলিশের হেফাজতে তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে তুমুল বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এ বিক্ষোভ রুখতে দমন-পীড়ন চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড।
গত শনিবার বিক্ষোভকারীদের কঠোর বার্তা দেন রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার হোসেইন সালামি। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আর রাস্তায় নামবেন না। আজ (শনিবার) দাঙ্গা-হাঙ্গামার শেষ দিন।’
বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন হোসেইন সালামি।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে চলমান দমন-পীড়নের প্রেক্ষাপটে দেশটির ব্যাপারে আরও কী পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে বার্লিন ও ইইউ।
এআরডি সম্প্রচারমাধ্যমকে আনালেনা বলেন, ‘আমি যেমনটা গত সপ্তাহে স্পষ্ট করেছিলাম, আমরা আরও একটি নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ দেব। আমরা কীভাবে রেভল্যুশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে পারি, তা–ও যাচাই করছি।’
২০১৯ সালে রেভল্যুশনারি গার্ডকে কালোতালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার হোসেইন সালামির হুমকি উপেক্ষা করে গতকালও ইরানে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে।
ইরানে নারীদের নেতৃত্বাধীন এ বিক্ষোভ সপ্তম সপ্তাহে গড়িয়েছে। বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভ দমনে গুলি পর্যন্ত চালানো হচ্ছে। বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।
বিক্ষোভ সহিংসভাবে দমন করায় ১২ জনের বেশি ইরানি কর্মকর্তার ওপর সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের গোয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ কাজেমি।
একই কারণে ইরানের ওপর সম্প্রতি নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয় ইইউ। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে ইরানের নীতি পুলিশ, দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের সাইবার বিভাগ, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারি জাহরোমি।
ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর মারা যান মাসা। তারপরই শুরু হয় বিক্ষোভ। এ বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ মারা গেছেন।