ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই প্রথম স্বীকার করলেন, তাঁর সেনাবাহিনী রাশিয়ার পশ্চিমের কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে।
গতকাল স্থানীয় সময় শনিবার রাতে টেলিভিশনে জেলেনস্কির যে ভাষণ প্রচারিত হয়, সেখানে তিনি বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এই যুদ্ধকে ‘আগ্রাসীদের অঞ্চলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে। গতকাল শনিবার ওই হামলা পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার ভেতর ১০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়ে গেছে বলেও জানা যাচ্ছে।
রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের এই হামলা ছিল অপ্রত্যাশিত। তাঁরা নিরাপত্তার জন্য সীমান্তের দুই পাশ থেকেই প্রচুর মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে আজ রোববারের শুরুতে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং সুমি অঞ্চলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটস্চকো বলেন, আকাশ সুরক্ষা ইউনিট ‘কাজ করছে’ এবং নগরজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতাও জারি রাখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করে শেল্টারে অবস্থান করার কথাও বলেছেন।
দেশটির বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কিয়েভ ও তার আশপাশের অঞ্চল এবং পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি আছে।
শনিবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের ‘যোদ্ধাদের’ ধন্যবাদ দেন। বলেন, তিনি রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে তাঁর দেশের জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার অলেকজান্ডার সিরস্কির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন প্রমাণ করেছে যে তারা প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং আগ্রাসীদের ওপর প্রয়োজনীয় চাপ নিশ্চিত করতে পারে।’
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করার পর রাশিয়ার এতটা ভেতরে আর কখনো যেতে পারেনি ইউক্রেনীয় বাহিনী।
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে রোববার প্রথম প্রহরের দিকে ইউক্রেনের হামলায় অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহত দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভ।
রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, রাশিয়া এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৬ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। বেসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের সীমান্ত এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কাজের গতি আরও দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান গভর্নর স্মিরনভ।