৯ বছরের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি বিশ্বনেতাদের

শতাধিক বিশ্বনেতা ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় সমঝোতা
রয়টার্স ফাইল ছবি

শতাধিক বিশ্বনেতা ২০৩০ সালের মধ্যে বন উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে এটিই প্রথম বড় সমঝোতা। আমাজন বনের বড় অংশ কেটে ফেলা হয়েছে ব্রাজিলে। সেই ব্রাজিলও প্রতিশ্রুতি দানকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে চুক্তিসই হবে। বন উজাড় বন্ধে সরকারি-বেসরকারি মিলে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৯২০ কোটি ডলারের তহবিল। পরিবেশবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ২০১৪ সালে ধীরগতিতে বন উজাড় নিয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন।

গাছ কেটে ফেলা ও বন উজাড় করে দেওয়া জলবায়ু পরিবর্তনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। কারণ, গাছ কার্বন নিঃসরণ কমাতে সহায়তা করে।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে আনতে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়।

বন উজাড় বন্ধের চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে বলে জানিয়েছে কানাডা, ব্রাজিল, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ বন রক্ষা করা সম্ভব হবে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি পুনরুদ্ধার, দাবানল নিয়ন্ত্রণ ও আদিবাসী সম্প্রদায়কে সহযোগিতা করার জন্য উন্নত দেশগুলো তহবিল বরাদ্দ পাবে।

২৮টি দেশের সরকার খাদ্য ও অন্যান্য কৃষিপণ্য যেমন পামতেল, সয়া ও কোকোর মতো বৈশ্বিক বাণিজ্যের বিষয়ে এবং বন উজাড় বন্ধ করতে একমত পোষণ করেছে। এ ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পশুচারণ ও শস্য উৎপাদনের জন্য গাছ কেটে উজাড় করে।

বিশ্বের বড় ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান বন উজাড়ের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধের জন্য একমত হয়েছে। কঙ্গোর বৃষ্টিপ্রধান ক্রান্তীয় বন রক্ষায় ১১০ কোটি ডলারের তহবিল বরাদ্দ করা হবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জলবায়ু সম্মেলনের আয়োজক। তিনি বনাঞ্চল রক্ষায় ঐতিহাসিক চুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জলবায়ু ও বনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সিমন লিউস বলেন, বিভিন্ন দেশে বন উজাড় বন্ধে রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সুসংবাদ। বন উজাড় বন্ধে যথেষ্ট তহবিলও বরাদ্দ হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে সিমন লিউস বিবিসিকে আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নতুন এই সমঝোতা অনুসারে সেই চাহিদার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

চাথাম হাউস সাসটেনেবিলিটি অ্যাক্সিলেটরের নির্বাহী পরিচালক অ্যানা ইয়াং বলেন, এই সমঝোতায় প্রচুর অর্থের জোগান রয়েছে। তবে চুক্তির কার্যকারিতা দেখার জন্য আরও সময় প্রয়োজন। এ ধরনের সমঝোতাকে কপ–২৬ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।