হ্যারি–মেগানের জনপ্রিয়তায় ভাটা

যুক্তরাজ্যের প্রিন্স হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান মার্কেল সাক্ষাৎকার দেন মার্কিন টিভি উপস্থাপিকা অপরাহ উইনফ্রেকে
ছবি: রয়টার্স

ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্দরের নানা ঘটনা প্রকাশ্যে এনে প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেলের সাক্ষাৎকার বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। হলিউড সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ—এ দম্পতির সাহসের প্রশংসা করেছেন। সহমর্মী হয়েছেন প্রাসাদে তাঁদের কষ্টের গল্পে। তবে হ্যারি–মেগানের এ অকপট সাক্ষাৎকার যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষের পছন্দ হয়নি। অপরাহ্ উইনফ্রেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি প্রচারের পর যুক্তরাজ্যে এ দম্পতির জনপ্রিয়তায় রীতিমতো ভাটা পড়েছে।

সাক্ষাৎকার প্রচারের পর ১ হাজার ৬৬৫ জনের মতামত নিয়েছে ব্রিটিশ জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ইউগভ। জরিপে বলা হয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের ৪৮ শতাংশ প্রিন্স হ্যারির বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের অজানা-অপ্রিয় তথ্য প্রকাশ্যে আনা উচিত হয়নি হ্যারির। অন্যদিকে তাঁর অবস্থানের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে ৪৫ শতাংশ ব্রিটিশের।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সাক্ষাৎকার প্রচারের আগের সময়ের চেয়ে গত সপ্তাহে হ্যারির জনপ্রিয়তা ১৫ পয়েন্ট কমে প্রথমবারের মতো ঋণাত্মক অবস্থানে নেমেছে। তবে তিনি কত পয়েন্টে ছিলেন জরিপে তা উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে ডাচেস অব সাসেক্স মেগানের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ নাগরিকদের নেতিবাচক মনোভাব আরও বেশি। জরিপে অংশ নেওয়া ৫৮ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক এখন মেগানকে পছন্দ করছেন না। প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র তিনজন মেগানের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।

অন্য একটি জরিপে দেখা গেছে, তরুণদের মধ্যে হ্যারি–মেগানের জনপ্রিয়তা তুলনামূলক বেশি। ১৮–২৪ বছর বয়সী ব্রিটিশরা তাঁদের সাক্ষাৎকার পছন্দ করেছেন। এর বিপরীতে বয়স্ক ব্রিটিশ নাগরিকেরা এ সাক্ষাৎকার পছন্দ করেননি। তাঁদের কাছে হ্যারি–মেগান দম্পতির জনপ্রিয়তা কমেছে।

ইউগভ বলছে, ৮০ শতাংশ ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে পছন্দ করেছেন। ৬৩ শতাংশ মনে করেন ব্রিটিশ রাজতন্ত্র যেভাবে চলছে, ভালোই চলছে। ২৫ শতাংশ মনে করেন রানির বদলে নির্বাচনের মাধ্যমে ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধান নিয়োগ দেওয়া দরকার।

প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল

৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রে সিবিএস টিভিতে হ্যারি–মেগানের সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়। ‘অপরাহ্ উইথ মেগান অ্যান্ড হ্যারি: এ সিবিএস প্রাইমটাইম স্পেশাল’ শিরোনামের বিশেষ টেলিভিশন শোটি যুক্তরাজ্যের আইটিভিতেও প্রচারিত হয় পরদিন সোমবার রাতে। এ সাক্ষাৎকারে কয়েক শ বছরের পুরোনো ব্রিটিশ রাজপরিবার সম্পর্কে অনেক অজানা ও অপ্রিয় কথা শুনিয়েছেন হ্যারি–মেগান দম্পতি। উঠে এসেছে বাইরে থেকে এসে রাজপরিবারে মেগানের খাপ খাইয়ে নেওয়ার লড়াই থেকে শুরু করে রাজতন্ত্রের বর্ণবাদী ও কর্তৃত্বপরায়ণ আচরণের কথা।

বলেছেন ব্যক্তিজীবনে রাজপরিবারের অযাচিত হস্তক্ষেপের গল্প। জানা গেছে মেগানের অনাগত সন্তান ‘কতটা কালো হবে’—তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার মতো চাঞ্চল্যকর সব ঘটনা। উঠে এসেছে মেগানের আত্মহত্যা করার ইচ্ছার পেছনের কারণ। এ দম্পতির যুক্তরাজ্য ছেড়ে মার্কিন মুলুকে থিতু হওয়ার ঘটনাপ্রবাহ।