আমরা মাঝেমধ্যে গৃহপালিত বা বন্য প্রাণী উদ্ধারে বিভিন্ন কর্মীর তৎপরতার কথা শুনতে পাই। কোনো প্রাণই যে ছোট্ট নয়, তা এমন উদ্ধার অভিযানে বুঝতে পারি। এমন সব সংবাদে মানবতার জয় হয়। চারদিকে প্রাণ বধের খবরের মধ্যে এমন কাজগুলো মানুষকে ভালো কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করে। বিশেষ করে তরুণদের উৎসাহিত করে প্রাণ-প্রকৃতির সঙ্গে থাকতে। আজকের বিচিত্রের বিষয় তেমনই এক ঘটনার। এটি ঘটেছে যুক্তরাজ্যের একটি পাতাল রেলস্টেশনে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা ইউপিআই জানায়, যুক্তরাজ্যের সাউথ অ্যাক্টন স্টেশনের রেললাইনের ওপর গত সোমবার সন্ধ্যায় একটি আহত রাজহাঁস অবস্থান নেয়। এটি কোনোভাবেই সেখান থেকে সরছিল না। পরে হাঁসটি উদ্ধার করতে সেখানে এক ঘণ্টার বেশি সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে ওই সময় উইলসডেন জংশন থেকে রিচমন্ড জংশনে চলাচলরত ১৪টি ট্রেন যাত্রাপথ অথবা সময়সূচি পরিবর্তন করে। খুশির সংবাদ হলো, উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতায় হাঁসটি শেষ পর্যন্ত উঠে দাঁড়ায় এবং সেটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
নিকোলা সিলিয়ার্স নামের এক ট্রেন যাত্রী বলেন, তিনি প্রথম যখন জানালা দিয়ে হাঁসটি রেললাইনের ওপর দেখেছিলেন, তখন ভেবেছিলেন এটা মজা করার জন্য করা হচ্ছে। এরপর যখন সেখানে পরপর দুটি ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়, তখন তাঁর চৈতন্য ফিরে আসে। একপর্যায়ে এক প্রকৌশলীসহ তাঁরা কয়েকজন ওই হাঁসটি আগলে রাখতে চেষ্টা করেন। কিন্তু যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো দাতব্য সংগঠনের সাড়া পাওয়া যায়নি। সিলিয়ার্স আরও বলেন, একপর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আমাকে লন্ডন ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশনের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। অবশেষে সেখান থেকে অ্যান নামের এক নারী হাঁসটি নিতে ঘটনাস্থলে আসেন।
প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লন্ডন ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশন এক বিবৃতিতে জানায়, ঘটনার পরিক্রমায় হাঁসটি কী করবে তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না। পরিমাপ করে দেখা গেছে, এটি কম ওজনের ছিল। ফলে এটি কোথাও যাওয়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে। ভাগ্য ভালো যে হাঁসটি বিদ্যুতায়িত রেল এড়িয়ে চলেছে।
উদ্ধারের পর রাজহাঁসটি আনুষ্ঠানিকভাবে লন্ডন ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর গত মঙ্গলবার সকালে একটি রাজহাঁসের পালের সঙ্গে সেটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।