ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ও ক্রিমিয়াতে সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। এমন সময়ে এ ঘটনা ঘটেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা ইস্যুতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করছে। খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইট ইমেজের ওই তথ্য কতটা সঠিক, তা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। ক্রেমলিন স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বলেছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে যেকোনো জায়গায় সেনা মোতায়েন বা বাড়ানোর অধিকার তাদের রয়েছে। ক্রেমলিনের অভিযোগ, পশ্চিমা দেশগুলো সীমান্তবর্তী এলাকায় উসকানিমূলক সামরিক আচরণ করছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ও ইউক্রেনের নেতারা এর আগে অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া গত অক্টোবর থেকে সীমান্তে সেনা মোতায়েন চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও অন্যান্য পশ্চিমা নেতাদের অভিযোগ, মস্কো ইউক্রেনে শিগগিরই, এমনকি আগামী মাসেও হামলা চালাতে পারে। তবে এমন অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে মস্কো।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে অধিকৃত ক্রিমিয়ায় শত শত সশস্ত্র গাড়ি ও ট্যাংক টহল দিচ্ছে। অথচ অক্টোবর মাসে নেওয়া স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, ওই একই ঘাঁটির অর্ধেকটা ফাঁকা।
ম্যাক্সার বলছে, ক্রিমিয়ার ওই ঘাঁটিতে সামরিক যান, ট্যাংক, নিজে চালিত কামান, বিমান প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রয়েছে। বিবৃতিতে ম্যাক্সার আরও বলছে, গত মাসে তাদের স্যাটেলাইটে দেখা গেছে, ক্রিমিয়ায় নতুন রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কয়েকটি সেনা প্রশিক্ষণকেন্দ্র খোলা হয়েছে।
ম্যাক্সার আরও বলছে, ক্রিমিয়ার তিনটি এলাকায় ও রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচটি এলাকায় সামরিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার বলেন, রাশিয়া সহিংসতা এড়াতে চায়। আগামী জানুয়ারি মাসে জেনেভায় নিরাপত্তা ইস্যুতে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে বলেও আশা করছে রাশিয়া।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ ইউক্রেন সীমান্তে সামরিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর বিষয়ে বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে মস্কো এমন আচরণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সীমান্তে উসকানিমূলক আচরণের কারণেই রাশিয়া সেনা বাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।
ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়ার ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন কর্মকর্তা জানান, রাশিয়া নতুন যেসব সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে সে জন্য তাঁদের রপ্তানির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হতে পারে।