ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোদোনেৎস্ক শহরের শেষ সংযোগ সেতুটিও ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ বাহিনী। আঞ্চলিক গভর্নর সেরগি গাইদাই বলেন, শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ এখন রুশদের নিয়ন্ত্রণে। খবর রয়টার্সের।
গাইদাই বলেন, তিনটি সেতু ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শহরটি এখন কার্যত যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। সেখানে থাকা বেসামরিক লোকজন আটকা পড়েছেন। শেষ সেতুটিও ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোও অসম্ভব হয়ে পড়ল বলছেন তিনি।
ইউক্রেনের এক কর্মকর্তা বলেন, নদী পার হয়ে শহর থেকে ইউক্রেনীয়দের সরে আসার আর কোনো পথ খোলা নেই।
সেভেরোদোনেৎস্ক রক্ষায় পশ্চিমা ভারী অস্ত্রশস্ত্রের জন্য জরুরি ভিত্তিতে আহ্বান জানিয়ে আসছে ইউক্রেন। কিয়েভ বলছে, পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের জন্য লড়াই এবং যুদ্ধের গতিপথ নিয়ন্ত্রণে শহরটি রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক প্রদেশের সমন্বয়ে দনবাস অঞ্চল গঠিত। রুশ–সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এই অঞ্চল নিজেদের দাবি করে আসছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া যুদ্ধে এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই চলছে।
গতকাল সোমবার দিন শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘এই লড়াইয়ে আমাদের ত্যাগ অনেক বেশি। একেবারে শিউরে ওঠার মতো।’ যুদ্ধে এগিয়ে থাকতে আধুনিক অস্ত্রের জন্য আবারও তিনি মিত্রদেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
দনবাস অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা মস্কোর কাছে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়ার মূল লক্ষ্য দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক রক্ষা করা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক বলেন, ইউক্রেনের ১ হাজার হাউইৎজার, ৫০০ ট্যাংক এবং ১ হাজার ড্রোন প্রয়োজন। সবশেষ কয়েকটি বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেওয়া অস্ত্র ও সরঞ্জাম ধ্বংসের দাবি করেছে মস্কো।
আরেকটি মারিউপোল?
মস্কোপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী মুখপাত্র এদুয়ার্দ বাসুরিনকে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ বলেছে, সেভেরোদোনেৎস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের কার্যকরভাবেই অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। তাঁদের হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে, না হয় মরতে হবে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় গঠিত আন্তর্জাতিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যামিয়েন ম্যাগরু বলেন, মারিউপোলের মতো পরিস্থিতির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের একটি অংশকে বড় একটি এলাকায় ইউক্রেনীয় সেনাদের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।
মারিউপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় কয়েক শ বেসামরিক নাগরিকসহ ইউক্রেনীয় সেনারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। পরে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বেসামরিক নাগরিক ও গুরুতর আহত সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। ইউক্রেনের সেনারা আত্মসমর্পণ করলে গত মাসে মারিউপোলের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় রুশ বাহিনী।