রুবলে রাশিয়ার গ্যাস কিনছে ইউরোপের চার দেশ

পাইপলাইনের মাধ্যমে ইউরোপের ২৩ দেশে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়ার গাজপ্রম
ছবি: রয়টার্স

মস্কোর বন্ধু নয়, এমন দেশগুলো রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে চাইলে এর মূল্য পরিশোধ করতে হবে দেশটির মুদ্রা রুবলে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মার্চের শেষে এ ঘোষণা দেন। পুতিনের এই ঘোষণার পর ইউরোপের চার দেশ রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য রুবলে মূল্য পরিশোধ করছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রমালিকানাধীন জ্বালানি কোম্পানি গাজপ্রমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, এমন এক ব্যক্তির বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হচ্ছে।

গোপন বিষয়, তাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, রাশিয়ার গ্যাস কিনতে অন্যান্য অনেক ক্রেতাই ক্রেমলিনের শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে। গতকাল বুধবার পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে রাশিয়া। তবে পরবর্তী অর্থ প্রদানের সময় আগামী মে মাসের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত কোথাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধের আশঙ্কা নেই।

গত মার্চে ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির জন্য শর্ত বেঁধে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিন বলেন, ক্রেতাদের গ্যাসের মূল্য রুবলে পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য তাদের গাজপ্রমের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে ইউরো ও ডলারে পরিশোধিত অর্থ রুবলে রূপান্তর করতে হবে। গাজপ্রমের ওই ব্যক্তি বলেন, গ্যাসের মূল্য পরিশোধে রাশিয়ার এমন শর্ত পূরণের জন্য ইউরোপের ১০টি কোম্পানি ইতিমধ্যে গাজপ্রমে তাদের ব্যাংক হিসাব খুলেছে।

গ্যাসের পাইপলাইন দিয়ে ইউরোপের ২৩ দেশে গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। তবে শর্ত মেনে রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে না পারায় গতকাল থেকে বুলগেরিয়া ও পোল্যান্ডে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়ার গাজপ্রম। ওই ব্যক্তির ভাষ্য অনুযায়ী গাজপ্রম বলছে, তারা ইইউয়ের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেনি।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর শুরুর পর মস্কোর ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া দেশটি থেকে গ্যাস আমদানির ক্ষেত্রে অবন্ধুসুলভ দেশগুলোর জন্য এ শর্ত দেয়। ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হয়েছে। তবে ইইউ জোট সদস্যদের বলেন, ক্রেমলিন যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে মস্কোর ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন হবে। তবে এরপরও ইউরোপের চার দেশ রুবলে গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করছে। তবে ওই ব্যক্তি দেশ চারটির নাম বলেননি।

ইউক্রেনে হামলার পর কোন কোন দেশ বন্ধু, আর কোন কোন দেশ বন্ধু নয়—এমন তালিকা করেছে রাশিয়া। এ তালিকায় মূলত রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরোধিতাকারীদের রাখা হয়েছে। রুশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্ধু নয়, এমন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন থেকে পর্যালোচনা করবে সরকারের একটি কমিশন। তারই অংশ হিসেবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে।