রাশিয়াকে পথ দেখানো পুতিন কি এবারের ধাক্কা সামলাতে পারবেন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
ছবি: এএফপি

মার্চের ২৯ তারিখ। তত দিনে ইউক্রেনে রুশ হামলার এক মাস পেরিয়ে গেছে। একদিকে চলছে হামলা, অন্যদিকে চালু রয়েছে দুই পক্ষের ধারাবাহিক শান্তি আলোচনা। ওই দিন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আশপাশে সামরিক কার্যক্রম কমিয়ে আনা হবে। রাশিয়া এখন ইউক্রেনের শুধু উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেবে।

এমন ঘোষণাকে ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যত ‘পরাজয়’ হিসেবে দেখছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকদের অনেকে। কেননা, ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর আগে-পরে তাঁদের অনেকেই বলেছিলেন, ইউক্রেন দখলে পুতিনের খুব বেশি সময় লাগবে না। বাস্তবে তেমনটি হয়নি। ‘যুদ্ধে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করতে না পারায়’ পুতিন তাঁর উপদেষ্টা ও সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে এমন খবর পাওয়া গেছে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইউক্রেনে রুশ হামলার পেছনে ভূরাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তার পরিবর্তে পুতিনের ব্যক্তিগত ইচ্ছা বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। চলতি বছর পুতিনের বয়স ৭০ বছর হবে। তাই তিনি হয়তো আর বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। সুযোগ্য উত্তরসূরি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তাঁকে। এর মাঝেই ইউক্রেনে অভিযানের জেরে একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় সংকটে পড়েছে রুশ অর্থনীতি। ইউক্রেনে সামরিক দিক থেকেও বেশ ক্ষতির শিকার হয়েছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতি পুতিনের এত দিনের অর্জন অনেকটাই স্লান করতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাঁর ২২ বছরের শাসনামলের অর্জন ও পরিণতি নিয়ে। এমনকি পুতিনের উত্তরসূরির সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ নিয়েও অনেকে কথা বলতে শুরু করেছেন।

পুতিনের উত্থান

সময়টা গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষ ভাগ। রাশিয়ার ক্ষমতায় তখন প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলেৎসিন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ক্ষমতায় বসেছিলেন তিনি। ইয়েলেৎসিন বিদায় নেওয়ার আগেই দেশটির রাজনীতিতে রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক এজেন্ট ও আমলা পুতিনের উত্থান ঘটে।

ইয়েলেৎসিন ছিলেন তুলনামূলকভাবে অজনপ্রিয় ও দুর্বল প্রকৃতির শাসক। ওই সময় রাশিয়া সমাজতন্ত্র থেকে বাজার অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হচ্ছিল। ফলে রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বহুমুখী চাপ সামলাতে হয়েছে তাঁকে। তাই যখন উত্তরসূরি খোঁজার প্রশ্ন সামনে আসে তখন এমন একজনের সন্ধান করা হয়েছিল, যাঁর সামর্থ্য ও উচ্চাশা ছিল।

রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্বাস গাল্লিয়ামোভের মতে, ওই সময় রাশিয়াবাসী একজন শক্তিমান শাসকের প্রয়োজন অনুভব করছিলেন; যিনি ক্ষমতায় এসে দেশের আইনশৃঙ্খলা জোরদার করবেন। রুশরা মূলত দেশপ্রেমিক জাতি। তাঁরা আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর কর্মকাণ্ড অপছন্দ করেন।

পুতিন যদি আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা আশির দশকের সোভিয়েত অর্থনীতি কিংবা এখনকার উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির মতো হতে পারে। বিপর্যয় নেমে আসতে পারে রুশ অর্থনীতিতে
—সের্গেই আলেকশাশেঙ্কো, রাশিয়ার সাবেক উপ-অর্থমন্ত্রী

পুতিন রুশ জাতির এ মনোভাব নিজের পক্ষে কাজে লাগিয়েছেন। সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা থেকে নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। নিজেকে এমন এক নেতা হিসেবে তৈরি করেছেন, যিনি পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে মানহানিকর যেকোনো কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে পারেন। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ শান্তি ও শৃঙ্খলা শক্ত হাতে রক্ষা করতে পারেন। এরই ধারাবাহিকতায় পুতিন যত বেশি কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছিলেন, ততই জনসাধারণের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়ছিল। এমনটা মনে করছেন আব্বাস গাল্লিয়ামোভ।

পুতিন ভাগ্যবান রাজনীতিক

পুতিন রাশিয়ার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছেন। অন্যদিকে পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধিতা এলেও বিভিন্ন সময় সমর্থনও পেয়েছেন তিনি। ২০০৫ সালে মস্কোয় বিজয় দিবসের আয়োজনে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের নেতারা উপস্থিত হন। ওই আয়োজনে পুতিন বলেছিলেন, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের ওপর ভিত্তি করে আমাদের এমন এক বিশ্বব্যবস্থা মেনে চলতে হবে, যেটি নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াবে না।

তবে সীমান্তের ওপারে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে ন্যাটোর সম্প্রসারণ পুতিনের উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। ২০০৭ সালে মিউনিখ নিরাপত্তা সংলাপে অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, দেশটি রাশিয়ার সীমানা অতিক্রমের পরিস্থিতি তৈরি করছে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দুই মেয়াদে পুতিন রাশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেন। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে সংস্কার তাঁকে এটি অর্জনে সহায়তা করেছিল। দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বছরে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেড়েছিল। দেশে ব্যবসার পরিবেশ তৈরিতে ও বিদেশি বিনিয়োগ টানতে পুতিন সমর্থক উদারপন্থী অর্থনীতিবিদেরাও তৎপর ছিলেন। ফলে সাধারণ রুশদের জীবনমান উন্নত হয়েছিল। শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণি সুসংহত হয়েছিল। ২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় গড় মজুরি বেড়েছিল প্রায় ১০ গুণ।

পুতিন একজন ভাগ্যবান রাজনীতিক। ২০০০ সালে তিনি যখন ক্ষমতায় আসেন তখন রাশিয়ার অর্থনীতি সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছিল। সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছিলেন পুতিন। এমনটা মনে করছেন নব্বইয়ের দশকে রাশিয়ার উপ-অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সের্গেই আলেকশাশেঙ্কো। তিনি বলেন, ২০০৮ সালেও যদি পুতিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছাড়তেন, তাহলে তিনি রাশিয়ার একজন খ্যাতিমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচিত হতেন।

কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ

পুতিনের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল দুই মেয়াদের পরও প্রেসিডেন্ট পদে টিকে থাকা। কেননা, রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, কেউ টানা তিন মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন না। এ জন্য ২০০৮ সালে তিনি দিমিত্রি মেদভেদেভের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন পুতিন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিভিন্ন জরিপে পুতিনের প্রতি সমর্থনের হার প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে সর্বোচ্চ ৮৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীন জরিপকারী প্রতিষ্ঠান লেভাডা জানিয়েছে, রাশিয়ার ৮১ শতাংশ মানুষ ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত সমর্থন করছেন। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়ও পুতিন এমন জনসমর্থন পেয়েছিলেন।

আব্বাস গাল্লিয়ামোভ জানান, ওই সময় পুতিন অবসরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করেছিলেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম কয়েক মাসে তিনি বড় কোনো দায়িত্ব নেননি। তবে ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের পর পুতিনের পরিকল্পনা বদলে যেতে শুরু করে। পরে ২০১১ সালে আরব বসন্তের ঘটনাবলি এবং লিবিয়ায় পশ্চিমা সামরিক আগ্রাসন ও মুয়াম্মার গাদ্দাফির হত্যাকাণ্ডের পর তা আরও বেগবান হয়। আব্বাস গাল্লিয়ামোভ বলেন, এসব ঘটনায় পুতিন নিরাপদ বোধ করতেন না। তাই তিনি পরিকল্পনা বদলে আগের চেয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।

ওই বছরের ডিসেম্বরে পুতিন জানিয়ে দেন, তিনি তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে লড়বেন। প্রতিবাদে বিরোধীরা রাজধানী মস্কোয় বড় ধরনের বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভের পেছনে তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন পুতিন। তবে এসব বিক্ষোভ-প্রতিবাদ তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়া ঠেকাতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করেন ও দনবাস অঞ্চলের বিদ্রোহীদের সমর্থন দিতে শুরু করেন।

এরপর পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন পুতিন। ২০১৫ সালে তিনি সিরিয়া যুদ্ধে সরাসরি সম্পৃক্ত হন। ২০১৯ সালে লিবিয়ায় রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের বিষয়ে নিজের সম্পৃক্ততা জোরদার করেন পুতিন।

বেশ কিছু ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানের কারণেও দেশে সমালোচিত হন পুতিন। ২০১২ সালে রুশ পার্লামেন্টে একটি আইন পাস হয়। এর আওতায় সুশীল সমাজের সংগঠনগুলোর বিদেশি তহবিল নেওয়ার সুযোগ সীমিত করা হয়। ২০১৯ সালে এই আইনে যুক্ত করা হয় সুশীল সমাজের ব্যক্তি ও সংবাদমাধ্যমকেও। ২০১৪ সালে অপর এক আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া যেকোনো বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

বিরোধীদের মতে, এসব আইনের মধ্য দিয়ে নিজের ক্ষমতা সমুন্নত রাখতে রাশিয়ায় রাজনৈতিক মতপ্রকাশের পথ সংকুচিত করেন পুতিন। রাশিয়ায় ২০১৯ সালের পর থেকে পুতিনবিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি একাধিকবার হামলা-মামলা-কারাবরণের শিকার হন। এমনকি ২০২০ সালে কেমিক্যাল এজেন্ট প্রয়োগ করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান।

এর মধ্যেই পুতিন শক্ত হাতে রুশ অর্থনীতির হাল ধরেন। কেননা, ২০১৪-১৫ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় দেশটির অর্থনীতি ধাক্কা খায়। আর এখন ইউক্রেনে হস্তক্ষেপের কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমারা। এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে চাঙা রাখা পুতিনের জন্য জরুরি ছিল বলে মত বিশ্লেষকদের।

ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে বিক্ষোভ হয়েছে

সের্গেই আলেকশাশেঙ্কোর মতে, ২০১০ সাল পরবর্তী এক দশকে পুতিন জ্বালানি ও ব্যাংকিং খাতসহ রাশিয়ার সামগ্রিক ব্যবসায় নিজের কঠোর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেন। তিনি বুঝতে পারেন, বেসরকারি ব্যবসা ও বিরোধীদের রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে তাঁকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে।

পুতিনের প্রতি সমর্থন বেড়েছে

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন রুশ হামলা শুরুর পর মস্কোসহ রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে যুদ্ধবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ হয়। তবে রুশ সরকার এসব বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমন করে। গ্রেপ্তার করা হন সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে। তবে যুদ্ধের মধ্যেও পুতিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

রাশিয়ার সরকারি ও বেসরকারি জরিপ সংস্থাগুলোর হিসাবে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিভিন্ন জরিপে পুতিনের প্রতি সমর্থনের হার প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে ৮১ থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীন জরিপকারী প্রতিষ্ঠান লেভাডা জানিয়েছে, রাশিয়ার ৮১ শতাংশ মানুষ ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত সমর্থন করছেন। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের সময়ও পুতিন এমন জনসমর্থন পেয়েছিলেন।

আব্বাস গাল্লিয়ামোভ বলেন, ‘পুতিন একজন শক্তিশালী নেতা। তবে তিনি নিজের কথা, ক্ষমতায় টিকে থাকার কথা যতটা ভাবেন, দেশের মানুষের কথা ততটা ভাবেন না। তিনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী একটি বড় রাজনৈতিক খেলা খেলছেন। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না।’

পুতিনের মূল্যবোধ

জাতীয়তাবাদ, রক্ষণশীল মনোভাব ও একটি শক্তিশালী রাশিয়া—ক্ষমতা ছাড়ার পরও জনগণের সামনে এই তিন মূল্যবোধ রেখে যেতে চান পুতিন। এ জন্য যুদ্ধ একটি উত্তম উপায়। কেননা, পুতিনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ইতিমধ্যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ইউরোপিয়ান ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরের শেষে রুশ অর্থনীতি ১০ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

এ বিষয়ে সের্গেই আলেকশাশেঙ্কো বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে রুশ অর্থনীতি ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। কবে নাগাদ এ প্রক্রিয়া শেষ হবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তাঁর মতে, পুতিন যদি আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতির অবস্থা আশির দশকের সোভিয়েত অর্থনীতি কিংবা এখনকার উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির মতো হতে পারে। বিপর্যয়ও নেমে আসতে পারে অর্থনীতিতে।
আল-জাজিরা থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ করেছেন অনিন্দ্য সাইমুম ইমন।