যেকোনো সময় ইউক্রেনে অভিযান চালাতে পারে রাশিয়া: যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়ার অভিযানের হুমকির মুখে ট্যাংক নিয়ে মহড়া চালাতে দেখা যায় ইউক্রেনের সেনাদের
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে অভিযানের পথে হাঁটছে মস্কো—এমন দাবি আগে থেকেই করে আসছিল পশ্চিমা বিশ্ব। এবার যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই অভিযান যেকোনো সময়ে শুরু হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেন ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাইসের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার হামলা আকাশ থেকে হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হতে পারে। এতে বেসামরিক লোকজনের জীবন যেমন ঝুঁকির মুখে পড়বে, তেমনই ইউক্রেন ত্যাগ করা তখন কঠিন হয়ে পড়বে।

দীর্ঘ সময় ধরে ইউক্রেন সীমান্তে লাখো সেনার সমাবেশ ঘটিয়েছে ক্রেমলিন। পাল্টা জবাবে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোও পূর্ব ইউরোপে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। সব মিলিয়ে ইউরোপে যুদ্ধের দামামা বাজছে। তবে প্রথম থেকেই রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেনে হস্তক্ষেপের কোনো পরিকল্পনা দেশটির নেই।

রাশিয়ার হামলার বিষয়ে গতকাল মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সতর্ক করে বলেন, ‘ইউক্রেনে বড় ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য রুশ বাহিনী চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে। যদিও আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুই বলতে পারব না, তবে এটা বলতে পারি, বর্তমানে সামরিক আগ্রাসনের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়েছে।’

জ্যাক সুলিভানের এমন সতর্কবার্তার পরপরই হোয়াইট হাউস পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশনা দেয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে ইউক্রেন ছাড়তে বলেছিলেন।

এদিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, রাশিয়ার হামলার শঙ্কার মুখে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁদের আরও পশ্চিমে পোল্যান্ডের সীমান্তের কাছে রাখা হবে।

ইউক্রেনে অবস্থান করা রুশ কূটনীতিকদের নিয়ে ভাবছে মস্কোও। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, কিয়েভে তাঁদের কূটনীতিকদের সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁরা ইউক্রেন বা অন্য কোনো পক্ষের উসকানির শিকার হতে পারেন—ভয় ক্রেমলিনের।

তবে কূটনীতিকদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পথে হাঁটবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। ইউক্রেনে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মেলিন্ডা সিমনস এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তিনিসহ কূটনীতিকদের পুরো দলটিই কিয়েভে অবস্থান করবেন।

এদিকে ইউক্রেন ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন দফায় দফায় চলছে কূটনৈতিক বৈঠক। সে ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর।

এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘শনিবার সকালে তাঁরা (বাইডেন ও পুতিন) ফোনে কথা বলবেন। রাশিয়া আগামী সোমবার এই ফোনালাপের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমরা পাল্টা শনিবারের প্রস্তাব দিই। আমাদের প্রস্তাবে পরে তারা রাজি হয়।’