যুক্তরাজ্যে ৪০ হাজারের বেশি রেলকর্মী দেশজুড়ে ধর্মঘটে নেমেছেন। গতকাল মঙ্গলবার থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে করে লাখ লাখ যাত্রী ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। রেল যোগাযোগে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে। তবে ধর্মঘট চললেও বেতন নিয়ে রেল ইউনিয়ন ও সরকার যার যার অবস্থানে অনড়। খবর রয়টার্সের।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবারের মতো কাল বৃহস্পতিবার ও আগামী শনিবার ধর্মঘট করবেন রেলের কর্মীরা। এতে করে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ ট্রেন চলাচল করছে না। ট্রেন স্টেশনগুলো জনশূন্য। পৃথক একটি ধর্মঘটের কারণে লন্ডনের পাতাল রেলও প্রায় বন্ধ।
কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে যুক্তরাজ্য। জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাওয়া নাগরিকদের জন্য কিছু করা নিয়ে চাপে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। এর মধ্যে ধর্মঘটে ব্যবসায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বলছে, রেলকর্মীদের ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে অন্যান্য পেশার মানুষজনও রাস্তায় নেমে আসবেন। শিক্ষক, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এমনকি আইনজীবীরাও আন্দোলন শুরু করবেন। কারণ দেশে মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। জীবনযাত্রার অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খাচ্ছে মানুষজন।
রেল, নৌ ও সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের ইউনিয়ন আরএমটির মহাপরিচালক মিক লিঞ্চ বলছেন, ‘আরএমটি সদস্যরা এই ধর্মঘটের মাধ্যমে দেশের সব কর্মীদের জন্য পথ দেখাচ্ছেন, যাঁরা বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মুনাফা ও সরকারি নীতির কারণে তাঁদের বেতন এবং শর্তাবলি হ্রাস পাওয়ায় অসুস্থ আর ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।’
এদিকে রেলকর্মীদের এ ধর্মঘট ‘ভুল ও অপ্রয়োজনীয়’ বলে মন্ত্রিসভাকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেন, সরকার জনস্বার্থে রেল পরিচালনা ব্যবস্থার উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সময়ে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হয় এমন কিছু না করে ‘সঠিক পথে থাকতে’ দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন তিনি।
তবে ইউগভ নামে এক সংস্থার করা জরিপ দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন ও ৪৫ শতাংশ এর বিরোধিতা করছেন।