নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্য শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব অনেক আগেই বাতিল করেছে যুক্তরাজ্য। এখন তিনি বলছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের লড়াইয়ে তিনি সাহায্য করতে চান। এ ছাড়া তিনি আরও বলেন, বাকি জীবনে তিনি আর কখনো আইএসে যোগ দেবেন না।
শামীমা বেগমের বয়স এখন ২২ বছর। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই বান্ধবীসহ যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। তাঁরা তিনজনই ছিলেন বাংলাদেশি–অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির ছাত্রী। সিরিয়ায় পাড়ি দিয়ে শামীমা বেগম ডাচ্ বংশোদ্ভূত আইএস জঙ্গি ইয়াগো রিদাইককে বিয়ে করেন।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ এক সাংবাদিক সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে শামীমার সাক্ষাৎ পান। তখন শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। এর কিছুদিন পর শামীমা একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। তবে কিছুদিন পর শিশুটির মৃত্যু হয়। ইয়াগো রিদাইক ও শামীমা বেগম দম্পতির আগেও দুটি সন্তান হয়েছিল। তবে কোনো সন্তানই বেঁচে নেই। অপুষ্টি ও অসুস্থতায় তারা মারা যায় বলে জানিয়েছিলেন শামীমা।
এখন শামীমা সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে রয়েছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি সমাজের কাজে আসতে পারেন। ওই শিবিরে থেকে তাঁর জীবন নষ্ট হচ্ছে।
যদিও শামীমার অবস্থান আগে এমন ছিল না; এর আগে তিনি যখন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার সাফাই গেয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ম্যানচেস্টার অ্যারেনা এলাকায় আইএসের বোমা হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, আইএসের ঘাঁটিতে যেভাবে হামলা চালানো হয়, ঠিক সেইভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এটাকে প্রতিশোধমূলক হামলা হিসেবে দেখতেন তিনি। ২০১৭ সালের ওই হামলায় শিশুসহ ১৭ জন নিহত হয়েছিল।
তবে এখন অবস্থান বদলেছেন শামীমা। তাঁকে বিবিসির সাংবাদিক জশ বেকার প্রশ্ন করেছিলেন, যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হামলা চালায়, মানুষ হত্যা করে—এমন একটি গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় তিনি কেমন বোধ করতেন। এই প্রশ্নের জবাবে শামীমা বলেন, ‘এ কারণে আমি নিজেকে ঘৃণা করি।’ তিনি বলেন, আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে সত্যিকারের অনুভূতি সম্পর্কে বলতে এখন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি।
শামীমা বলেন, আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে মানুষকে কীভাবে প্রলুব্ধ করে, সেই কৌশল সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারকে ধারণা দিতে পারবেন তিনি। যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারলে তিনি এই কাজ করতে পারবেন।
এর আগে গতকাল বুধবার আইটিভির সঙ্গেও কথা বলেছেন শামীমা। এই সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের লড়াইয়ে ‘সম্পদ’ হতে পারেন তিনি।