বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর পদত্যাগের দাবিতে বেলারুশে ফের জনবিক্ষোভ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরপাকড়ের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বিক্ষোভ জমায়েত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে কয়েক ডজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। এ নিয়ে বেলারুশে বিক্ষোভের চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বর্তমান ধরপাকড়ের কারণে কিছুদিনের মধ্যেই বিক্ষোভের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
মিনস্কে বর্তমানে স্থানীয় দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমন করতে দিনকে দিন কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। রাজধানী মিনস্কের কেন্দ্রে কোনো ব্যক্তিকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। যারা বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে, তাদের আটক করছে পুলিশ।
বিবিসি বলছে, স্থানীয় পুলিশ মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালাচ্ছে। ছুটি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরা শিক্ষার্থীদেরও আটক করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে রাস্তা থেকেই ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবস্থান নিয়েছে। তাদের সঙ্গে সাঁজোয়া যান ও জলকামানের গাড়ি।
লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ জমতে জমতে এবার উত্তাল বিক্ষোভের রূপ নিয়েছে। সবকিছুর মূলে আছে গত আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন। গত ৯ আগস্টের নির্বাচনের পর আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ঘোষণা করেন, ৮০ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু বিরোধীরা এই বিজয় মানতে নারাজ। তাদের দাবি, এই নির্বাচনে সীমাহীন জালিয়াতি হয়েছে।
এদিকে একটি স্বাধীন নির্বাচনী জরিপে দেখা গেছে, লুকাশেঙ্কো আসলে পেয়েছেন ৪০ শতাংশ ভোট। আর তাঁর প্রতিযোগী স্ভেতলানা টিখানোভসকিয়া পেয়েছেন প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোট। বিরোধীদের দাবি, পরাজয় মেনে আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেলারুশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনবিক্ষোভ দেখছে বিশ্ব।