দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত বাহিনীর হাতে জার্মান নাৎসি বাহিনীর পরাজয়ের দিনটিকে ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে রাশিয়া। আজ সোমবার ছিল ওই বিজয়ের ৭৭তম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ারে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। সেখানে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনে হামলার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর আল-জাজিরার
ভাষণে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নেওয়া সামরিক ব্যবস্থাকে সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আগাম পদক্ষেপ বলে দাবি করেন পুতিন। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশটিতে তাঁর সেনারা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের ১১তম সপ্তাহ চলছে। এই যুদ্ধের অগ্রগতি নিয়ে কিছু বলেননি পুতিন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এদিন আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা কিংবা মারিউপোল বিজয়ের ঘোষণা দিতে পারেন—পশ্চিমাদের এমন গুঞ্জনেও জল ঢেলে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ভাষণে এমন কোনো কিছুর ইঙ্গিত ছিল না। ইউক্রেনে হামলাকে বরাবরের মতো ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
পুতিন দাবি করেন, পশ্চিমা দেশগুলো ও ন্যাটোর হুমকিতে ছিল রাশিয়া। তারা ক্রিমিয়ায় হামলার পরিকল্পনা করছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছ থেকে নিজ ভূখণ্ডে যুক্ত করে নিয়েছিল রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গত বছর একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আমরা ন্যাটোকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেনি। তাদের সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিকল্পনা ছিল। ক্রিমিয়ায় হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘জোটটি আমাদের নিকটবর্তী ভূখণ্ডে সামরিক কর্মকাণ্ড জোরদার শুরু করেছিল। ফলে এই লড়াই অনিবার্য ছিল।’
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলে যুদ্ধরত তাঁর বাহিনীগুলোর প্রশংসা করেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনাদের মাতৃভূমি এবং এর ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করছেন।’ তাঁর ভাষায় এই ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’ বলেও দাবি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
এ সময় পুতিন বলেন, ‘প্রত্যেক সেনাসদস্য ও কর্মকর্তার মৃত্যুই আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। তাদের পরিবারের দেখভালে রাষ্ট্র সবকিছু করবে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই বিজয় স্মরণে রেড স্কয়ারে আয়োজিত বিশাল এই কুচকাওয়াজে হাজারো সেনা অংশ নেয়। এতে ট্যাংক, রকেট, আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সমরাস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। সমবেত সেনাদের সঙ্গে বিজয়ধ্বনি দিয়ে পুতিন বক্তব্য শেষ করেন ‘রাশিয়ার জন্য, বিজয়ের জন্য, হুররে!’