সৈকতে ঘুরতে গিয়ে অনেকেই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বালু, পাথর, প্রবালসহ নানা কিছু সংগ্রহ করেন। তবে ভূমধ্যসাগরের তীরে ইতালির সার্ডিনিয়া সৈকতে বেড়াতে গিয়ে এমন কাজ করলে মাশুল গুনতে হবে। বড় পরিমাণে জরিমানা তো হবেই, জেলও হতে পারে। ইতালির পুলিশের দেওয়া এক পরিসংখ্যানেই এ তথ্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ইতালির পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর তারা ২০০ পাউন্ডের বেশি বালু, পাথর, প্রবাল জব্দ করেছে, যা স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সঙ্গে নিয়ে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন পর্যটকেরা। গত সপ্তাহে সেসব আবারও সৈকতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, গোলাপি ও সাদা বালুর জন্য ইতালির সৈকতগুলো প্রসিদ্ধ। ব্যতিক্রম নয় মনোরম সার্ডিনিয়া সৈকতও। এখানে বেড়াতে এলে অনেকেই বালু, পাথর সঙ্গে নিতে চান। এতে ক্ষতি হয় সাগরকেন্দ্রিক প্রাণ–প্রতিবেশের। এ সমস্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় ২০১৭ সালে আঞ্চলিক সরকার একটি আইন করে। এ আইনের আওতায় সার্ডিনিয়া সৈকত থেকে প্রাকৃতিক উপকরণ সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ।
আইন ভেঙে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সৈকতের বালু, পাথর সংগ্রহের দায়ে গত বছর ৪১ জনকে জরিমানা করেছে ইতালির পুলিশ। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, এ জন্য পর্যটকদের ৫০০ থেকে ৩ হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ করা ২২০ পাউন্ড প্রাকৃতিক উপকরণ সৈকতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এ সৈকতে পর্যটক সমাগম অনেক কম ছিল। তারপরও স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বালু, পাথর সংগ্রহের এসব ঘটনা ঘটেছে।
শুধু কি তাই, অনেক ই–কমার্স প্ল্যাটফর্মে সৈকতের বালু, পাথর, প্রবাল বিক্রির চেষ্টা করেন। এসব অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ওপর কড়া নজর রাখে ইতালির পুলিশ। এমনকি দ্বীপ থেকে ফেরার পথে বিমানবন্দরে পর্যটকদের তল্লাশিও করা হয়। স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বালু, পাথর বা প্রাকৃতিক অন্য কিছু সংগ্রহের বিষয়টি ধরা পড়লেই গুনতে হয় বিশাল জরিমানা। অনাদায়ে কারাবাস।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে একজন ফরাসি পর্যটক সার্ডিনিয়া থেকে ফেরার সময় স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ৪ পাউন্ডের বেশি সৈকতের বালু লাগেজে ভরেছিলেন। বিমানবন্দরে তল্লাশির সময় অবশ্য ধরা পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ১ হাজার ইউরো জরিমানা করে পুলিশ। এর আগের বছরও গাড়িতে ১৪টি প্লাস্টিকের বোতলে ভরা সৈকতের সাদা বালুসহ ধরা পড়েছিলেন এক ফরাসি দম্পতি। তাঁদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ কেজি বালু জব্দ করা হয়েছিল।