বরিস জনসন
বরিস জনসন

দলীয় প্রধানের পদ ছাড়লেন বরিস জনসন, ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রিত্বও

সরকার ও দলে নজিরবিহীন চাপে পড়ে দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার বরিস জনসন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন। পরে এক ভাষণে নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার সময় হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ভাষণে বরিস জনসন বলেছেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সময়সীমা ঘোষণা করা হবে।

বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা চালান বরিস। তবে দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের পদত্যাগ চলতে থাকায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়, সরকার চালানো সম্ভব হবে না। তাঁকে সরে যেতে হবে।

বিবিসির পলিটিক্যাল এডিটর ক্রিস মেসন সরাসরি সম্প্রচারে জানান, দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বরিস। আর এরই মধ্য দিয়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টার নাটকীয়তার অবসান ঘটে।

বরিস জনসন নেতৃত্বাধীন সরকার ঘিরে কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতা গত মঙ্গলবার নতুন মাত্রা পায়। এ দিন মাত্র ১০ মিনিটের ব্যবধানে অর্থমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেন।

এরপর জুনিয়র মন্ত্রী ও এমপিদের পদত্যাগ এবং অনাস্থা জানানোর হিড়িক শুরু হয়। গতকাল বুধবার রীতিমতো পদত্যাগের বন্যা বয়ে যায়। চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জনের বেশি মন্ত্রী ও সহযোগী পদত্যাগ করেন। আজ সকাল নাগাদ সেটা প্রায় অর্ধশত জনে গিয়ে ঠেকে।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের একটি দল ডাউনিং স্ট্রিটে যান প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে রাজি করাতে। তবে পদত্যাগ না করার বিষয়ে অনড় থাকেন বরিস জনসন। গত নির্বাচনে ভোটারদের ‘বিপুল ম্যান্ডেট’ পাওয়ায় তাঁর পদত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানান। পার্লামেন্টের অধিবেশনেও একই ইঙ্গিত দেন তিনি।

কিন্তু আজও মন্ত্রিসভা ও দল থেকে পদত্যাগের ধারা অব্যাহত থাকে। তাঁরা অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। অব্যাহত চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করেন বরিস।

তিন বছরেরও কম সময় আগে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হন বরিস। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস মহামারিতে আরোপিত লকডাউনের বিধিনিষেধ ভেঙে পার্টি আয়োজন ও জরিমানা প্রদান।

এর মধ্যে একজন কনজারভেটিভ পার্লামেন্ট সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী আমলে না নেওয়ায় অসন্তোষ তীব্র হয়।