জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ফ্রান্সের সড়কে নেমে এসেছে লাখো মানুষ। এর মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ঘেরাওয়ের মুখে আতঙ্কিত এক চালকের গাড়ির ধাক্কায় এক বৃদ্ধ নারী বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভের ঘটনায় দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। গতকাল শনিবার ফ্রান্সজুড়ে এ বিক্ষোভ চলে।
আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ ফ্রান্সজুড়ে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। ২২৭ জন আহত হয়। এর মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আর ৫২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হলুদ জ্যাকেট ‘ইয়েলো ভেস্ট’ পরে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। তাদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ‘ছোট লোকজনকে’ পরিত্যাগ করেছেন।
বিক্ষোভের বেশির ভাগ স্থানেই সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যেসব স্থানে বিক্ষোভকারীরা আহত হয়েছে সেগুলোর কয়েকটির ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বাধার মুখে জোর করে গাড়ি চালাতে গিয়ে কেউ কেউ তাঁদের গাড়ি বিক্ষোভকারীদের ওপরে তুলে দিয়েছেন।
শোনতেল ম্যাজে নামের ৬৩ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে এভাবে। এক নারী তাঁর মেয়েকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় ৫০ জনের মতো বিক্ষোভকারী তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে। আতঙ্কিত হয়ে তিনি জোর করে গাড়ি চালিয়ে নেওয়ার সময় গাড়ির ধাক্কায় ওই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়। ওই নারী চালককে পরে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিক্ষোভের ব্যাপারে মাখোঁ এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। কিছু বিক্ষোভকারী মাখোঁর পদত্যাগ দাবি করেছে।
প্যারিসে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে তাদের প্রতিহত করে।
ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের দাম গত ১২ মাসে ২৩ শতাংশ বেড়েছে। মাখোঁ সরকার এ বছর হাইড্রোকার্বন কর বাড়িয়েছে। প্রতি লিটার ডিজেলে ৭ দশমিক ৬ সেন্ট এবং পেট্রলে ৩ দশমিক ৯ সেন্ট করে দাম বাড়িয়েছে।
আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ডিজেল ও পেট্রলের দাম আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি লিটার ডিজেলে ৬ দশমিক ৫ সেন্ট এবং পেট্রলে ২ দশমিক ৯ সেন্ট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এ ঘটনা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার থেকে বিক্ষোভ এত বড় আকার ধারণ করে এবং মাখোঁর অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে লোকজন।