প্যান্ডোরা পেপারস

প্রেসিডেন্টের ১১ বছরের ছেলের ৩ কোটি পাউন্ডের সম্পদ

লন্ডনের মেফেয়ারে হায়দারের নামে কেনা ভবনের কাছের আরেকটি ভবন বিক্রি করে দেওয়া হয়
ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

হায়দার আলীয়েভের বয়স ১১ বছর। সে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলীয়েভের ছেলে। শিশু হায়দারের জন্য যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে কেনা হয়েছিল একটি ভবন, তবে গোপনে। ৩ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে এই অফিস ভবনটি কেনা হয় অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে। সদ্য প্রকাশ হওয়া প্যান্ডোরা পেপারসে উঠে এসেছে এমন তথ্য। খবর গার্ডিয়ান ও বিবিসির।

করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত পানামা, দুবাই, মোনাকো, সুইজারল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের মতো দেশের অফশোর কোম্পানিতে বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে অর্থ রেখেছেন ও গোপন লেনদেন করেছেন, সেই তথ্য ফাঁস  হয়েছে প্যান্ডোরা পেপারসে। বিশ্বব্যাপী অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের জোট ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) উদ্যোগে ৬৫০ জনের বেশি সাংবাদিক এসব নথি বিশ্লেষণ করেন।

প্যান্ডোরা পেপারসে ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা গেছে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলীয়েভের পরিবার গোপনে লন্ডনে ১৭ সম্পত্তি কিনেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্টের ছেলের জন্য কেনা ওই ভবনটি। শুধু প্যান্ডোরা পেপারসে ফাঁস হওয়া কেলেঙ্কারিই নয়, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে আলীয়েভের পরিবারের বিরুদ্ধে।

প্যান্ডোরা পেপারস বলছে, ২০০৯ সালে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের এক পারিবারিক বন্ধুর মালিকানাধীন কোম্পানির মাধ্যমে লন্ডনের মেফেয়ার এলাকায় ওই অফিস ভবনটি কেনা হয়েছিল। এক মাস পরে তা হায়দার আলীয়েভের নামে হস্তান্তর করা হয়।

অনুসন্ধানী ওই গবেষণায় দেখা গেছে, লন্ডনের মেফেয়ারে হায়দারের নামে কেনা ভবনের কাছেই আলীয়েভের পরিবারের মালিকানায় থাকা আরেকটি ভবন ছিল। ২০১৮ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারের মালিকানাধীন ক্রাউন স্টেটের কাছে ৬ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ডে সেটি বিক্রি করা হয়। এ বিষয়ে ক্রাউন স্টেট বলছে, ওই সম্পত্তি কেনার সময় আইন অনুযায়ী সব ধরনের পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। তবে এখন বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

অফশোর কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগকারী হিসেবে যাঁদের নাম পাওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ জন নেতা এবং ৩০০-এর বেশি সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। ৯০টির বেশি দেশের এসব কর্মকর্তার মধ্যে মন্ত্রী, বিচারক, মেয়র ও সেনাবাহিনীর জেনারেলরা রয়েছেন। আরও আছেন কোটিপতি, বিভিন্ন ক্ষেত্রের জনপ্রিয় ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। এই তালিকায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলীয়েভ, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রে বাবিসের মতো নেতাদের নাম উঠেছে।