তিউনিসিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের একটি নৌকাডুবির ঘটনায় কমপক্ষে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানায়, নৌকাটি গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুয়ারা থেকে রওনা হয়।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, তিউনিসিয়ার কাছে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসনপ্রত্যাশীবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নৌকাডুবির ঘটনায় আরও ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেছেন, বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুয়ারা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীবোঝাই নৌকাটি ছেড়ে যায়। এরপরই প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে নৌকাটি। চলতি বছর এটিই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী কোনো নৌকাডুবির সবচেয়ে ভয়াবহতম ঘটনা।
ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে লিবিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
নৌকাডুবির পর তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করে উপকূলে ফিরে আসার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতির অপেক্ষায় আছে। ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, উদ্ধার করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি জাহাজ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নৌবাহিনী। এ সময় মাছ ধরা একটি নৌকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করছিল বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।
এদিকে ওই নৌকার আরোহীরা সাব-সাহারান আফ্রিকা বাসিন্দা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউএনএইচসিআরের একজন কর্মকর্তা ভিনসেন্ট কোহটেল এক বিবৃতিতে জানান, যাঁরা এখনো ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে চান, এই ঘটনা সেটির মর্মান্তিক এবং ভয়াবহতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
প্রতিবছর হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাত্রী এবং অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকের মৃত্যু হয়।
এ বছরের প্রথম তিন মাসে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে ১৫ হাজার ৯০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপে গেছেন। ২০১৮ সালের প্রথম তিন মাসের তুলনায় এ সংখ্যা ১৭ শতাংশ কমেছে। এ বছরের জানুয়ারিতে জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে বলেছে, গত বছর দিনে গড়ে ৬ জন করে অভিবাসনপ্রত্যাশী মানুষের মৃত্যু হয় ভূমধ্যসাগরে।
জানা যায়, ভূমধ্যসাগরের জলপথে ইউরোপে যাওয়ার পথে লিবিয়া উপকূলে এ ধরনের নৌকাডুবির ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে লিবিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিবাসীদের ঠেকানোর কাজে ব্যবহার করছে ইতালি। এ কারণে ২০১৭ সালের মধ্যভাগ থেকেই লিবিয়া উপকূল থেকে ইউরোপে অভিবাসীদের নৌযাত্রা কমছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বরাবরই ইতালির এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে আসছে।