ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর আগের চেয়ে এখন জীবাশ্ম জ্বালানি বিক্রি করে বেশি আয় করছে রাশিয়া। এ কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক জ্বালানি নিরাপত্তাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা অ্যামোস হোচস্টেইন। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটরদের এ কথা বলেন। রুশ ইংরেজি গণমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
হোচস্টেইন এর আগে মার্কিন জ্বালানি নিরাপত্তা দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বলেন, বাড়তে থাকা বৈশ্বিক জ্বালানির দাম রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে বেড়েই চলেছে। এতে আখেরে উপকার হয়েছে রাশিয়ারই।
তেল এবং গ্যাসের বাণিজ্য থেকে মস্কো কী এখন কয়েক মাস আগের চেয়ে বেশি আয় করছে, এ বিষয়ে হোচস্টেইনের কথা, ‘এটা আমি অস্বীকার করতে পারি না।’
হোচেস্টেইন ইউরোপ ও আঞ্চলকি নিরাপত্তা সহযোগিতা–সংক্রান্ত সিনেট সাব কমিটিতে এ কথা বলেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে মার্চের শুরুতে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল, কিছু পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লার আমদানি সীমাবদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে গত বুধবার ডুমার স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভোলোডিন বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তেল সরবরাহ ‘ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে’।
দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে অনিচ্ছুক ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এ জোট গত মে মাসের শেষদিকে রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করতে একমত হয়। শুরুতে ৭৫ শতাংশ আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেও বছরের শেষ নাগাদ ৯০ শতাংশ আমদানি বন্ধ করার কথা জানিয়েছে ইইউ। তবে হাঙ্গেরিসহ এ জোটভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশকে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়। কারণ রাশিয়ার সরবরাহ না থাকলে এসব দেশের অর্থনীতি অচল হয়ে পড়বে।
আরটির প্রতিবেদনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার জ্বালানি বাণিজ্য তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গত এপ্রিলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, শুধু এক মাসে একদিনে রাশিয়ার তেলের চালান তিন লাখ ব্যারেল বেশি হয়েছে।
রাশিয়া গত মাসে বলে যে, এশীয়–প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার নতুন নতুন কিছু দেশ তাদের অপরিশোধিত তেল আগের চেয়ে বেশি করে কিনছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে আছে ভারত।