কাগজে নানা হিসাব-নিকাশ করতেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। কিন্তু হিসাব না মিললে সে কাগজ ফেলে দিতেন। আপেক্ষিকতার তত্ত্ব নিয়ে কাজ করার সময় এমনই একটি পাণ্ডুলিপিতে নানা হিসাব-নিকাশ করেছিলেন তিনি।
সৌভাগ্যক্রমে সেটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল তাঁর বন্ধু সুইজারল্যান্ডের প্রকৌশলী মিশেল বেসোর হাতে। সেই পাণ্ডুলিপি প্যারিসের এক নিলামে বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলারে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১১২ কোটি টাকা।
নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিস বলেছে, ১৯১৩ ও ১৯১৪ সালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে আইনস্টাইন এবং বেসো একটি সমস্যা নিয়ে কাজ করছিলেন। বুধ গ্রহের কক্ষপথের অসংগতি নিয়ে কয়েক দশক ধরে এ সমস্যাই সমাধানের চেষ্টা করছিলেন গবেষকেরা।
প্রাথমিক পাণ্ডুলিপিতে একটি নির্দিষ্টসংখ্যক ত্রুটি রয়েছে। আইনস্টাইন সেটি ধরতে পারার পর পাণ্ডুলিপিটি ফেলে দেন। এরপর বেসো তা তুলে নেন। আইনস্টাইনের হাতে লেখা ১৯১৯ সালের আগের পাণ্ডুলিপি বিরল। তাঁর দুটি পাণ্ডুলিপির একটিতে আপেক্ষিকতার তত্ত্বের বিষয়টি উঠে এসেছে।
ক্রিস্টিস আরও জানায়, নিলামে ওঠা ৫৪ পৃষ্ঠার বিরল ওই পাণ্ডুলিপিতে ছিল আইনস্টাইনের বিখ্যাত আপেক্ষিকতা তত্ত্বের প্রাথমিক কিছু হিসাব-নিকাশ, যা ১৯১৫ সালে প্রকাশিত হয়। এখন পর্যন্ত নিলামে ওঠা আইনস্টাইনের পাণ্ডুলিপিগুলোর মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে মূল্যবান।
ক্রিস্টিস বলেছে, এ পাণ্ডুলিপিতে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা রয়েছে। ১৯১৬ সালে থিওরি অব রিলেটিভিটি তত্ত্ব প্রকাশিত হয়; যা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে সেই সময়ের যাবতীয় ধ্যানধারণা বদলে দেয়। এর পাঁচ বছর পর ১৯২১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান আইনস্টাইন। ১৯৫৫ সালে ৭৬ বছর বয়সে মারা যান এই বিজ্ঞানী। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ তাত্ত্বিক পদার্থবিদদের একজন হিসেবে পরিচিত তিনি।