নিজেদের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সচেষ্ট হবে ব্রিকস

উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তিগুলোর সংগঠন ব্রিকসের নেতারা নিজেদের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টার ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার সম্মত হয়েছেন। তাঁরা রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা অবরোধের বিরোধিতা করেছেন। বিশ্ব অর্থনীতি ও তেলের দামের দোদুল্যমান অবস্থা নিয়েও উৎকণ্ঠিত এ নেতারা। খবর রয়টার্স ও পিটিআইর।
ব্রিকসের সদস্য পাঁচ দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতারা রাশিয়ার উফা শহরে সংগঠনটির শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন। এতে স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘বাজারের অস্থিতিশীলতা, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের মূল্যের অতি দোদুল্যমানতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এসব ভারসাম্যহীনতার প্রভাব পড়ছে প্রবৃদ্ধি এবং আমাদের অর্থনীতির ওপর। এ পরিস্থিতিতে ব্রিকসের সদস্যদেশগুলো উন্নয়নের লক্ষ্যে নিজেদের সম্পদ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ সক্রিয়ভাবে কাজে লাগাতে চায়।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অর্থনীতির বর্তমান মন্দাবস্থার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘কিছু অসুবিধা’ রয়েছে বলে স্বীকার করে তিনি ব্রিকসের সমন্বিত কার্যক্রম বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
ব্রিকসের সদস্য পাঁচটি দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্মিলিতভাবে বিশ্বের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
ইউক্রেন-সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে দেশটিতে পশ্চিমা অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে রাশিয়ায় বিনিয়োগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিও নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। এখন ব্রিকসের মতো সংগঠনের সম্মিলিত অর্থনৈতিক শক্তিকে উত্তরণের গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছে দেশটি। অবশ্য সংগঠনটির সদস্যদেশগুলো ২০০৯ সাল থেকে নিয়মিত বৈঠক করলেও বড় ধরনের সম্মিলিত পদক্ষেপের পরিবর্তে তাদের কার্যক্রম মূলত পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার মধ্যেই সীমিত ছিল।
নতুন ব্যাংক চালু হচ্ছে আগামী বছর: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ব্রিকস ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম আগামী বছর শুরু হবে। এটি বিভিন্ন জ্বালানি প্রকল্প ও শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে অর্থায়ন করবে। পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত অর্থব্যবস্থাকে মোকাবিলাই হবে নতুন ব্যাংকটির লক্ষ্য।
সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ‘রাজনৈতিক পন্থা’ নয়: সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় কোনো ‘রাজনৈতিক পন্থা’ এবং ‘কেবল নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার’ মতো পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত হবে না। বরং সব দেশকে সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে। উফা সম্মেলনে ব্রিকসের সদস্যদেশগুলোর নেতারা এ কথা বলেছেন। পাঁচটি দেশই ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং অন্যান্য সংগঠনের জঙ্গি তৎপরতার নিন্দা জানিয়েছে।