তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোর সেনাসদস্য ও নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযান খাতা–কলমের হিসাবে শেষ হয়েছে। তবে দেশটিতে এখনো আটকা পড়ে আছেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও তাঁদের সহায়তাকারী আফগানরা। তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে দেশটির সরকার। খবর এএফপির।
যুক্তরাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র আজ বুধবার এএফপিকে জানান, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের বাকি নাগরিক ও দেশটির সঙ্গে কাজ করা আফগানদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এ লক্ষ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছেন সাইমন গাস নামের একজন ব্রিটিশ কর্মকর্তা। রাজধানী কাবুলের পতনের আগে তালেবানের অনেক শীর্ষ নেতাই দোহায় নির্বাসিত ছিলেন। তাঁদের অনেকেই এখন আফগানিস্তানে ফিরেছেন।
৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর এটিকে তালেবান ও লন্ডনের মধ্যে প্রথম কূটনৈতিক যোগাযোগ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে কাবুল থেকে এক লাখের বেশি মানুষকে আফগানিস্তানের বাইরে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো। এর মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে গত ২০ বছরের যুদ্ধে সহায়তাকারী ৮ হাজার আফগানও রয়েছেন।
এদিকে আফগানিস্তান থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার অভিযান ঘিরে তোপের মুখে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। দেশটি থেকে ন্যাটোকে সহায়তা করা আরও আফগানকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো বলে দাবি করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, এসব মানুষকে একপ্রকার তালেবানের করুণার মুখে ছেড়ে আসা হয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে আরও ৮০০ থেকে ১ হাজার মানুষকে নিরাপদে নেওয়া সম্ভব ছিল বলে মনে করছেন যুক্তরাজ্যের এক মন্ত্রী। এএফপির কাছে নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। বিতর্কের মুখে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবও। তালেবানের আফগানিস্তান দখলের মতো সংকটময় পরিস্থিতির সময় তিনি ছুটি কাটাচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাঁর সমালোচনা করেছে দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি।
এর আগে গত শনিবার ব্রিটিশ সেনাসদস্যদের নিয়ে রাজধানী কাবুল ত্যাগ করে যুক্তরাজ্যের শেষ উড়োজাহাজটি। এ সময় কাবুলে উদ্ধার অভিযানে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান বরিস জনসন। দুই সপ্তাহের কম সময়ে আফগানিস্তান থেকে ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে তাঁরা সরিয়ে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।