চীনের বিআরআইয়ের পাল্টা ৬০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল গঠন করছে জি-৭

বৈশ্বিক অবকাঠামো ও বিনিয়োগ অংশীদারত্ব (পিজিআইআই) প্রকল্পটি গতকাল রোববার জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলনে নতুন নামে পুনরায় তোলা হয়।
বৈশ্বিক অবকাঠামো ও বিনিয়োগ অংশীদারত্ব (পিজিআইআই) প্রকল্পটি গতকাল রোববার জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলনে নতুন নামে পুনরায় তোলা হয়।

উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ৬০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল গঠনের বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন জি-৭ নেতারা। দৃশ্যত চীনের আঞ্চলিক ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) প্রকল্পের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে উন্নত দেশগুলোর জোট এই পরিকল্পনা নিয়েছে। খবর বিবিসির ও আল-জাজিরার।

বৈশ্বিক অবকাঠামো ও বিনিয়োগ অংশীদারত্ব (পিজিআইআই) প্রকল্পটি গতকাল রোববার জার্মানিতে জি-৭ সম্মেলনে নতুন নামে পুনরায় তোলা হয়। এর আগে গত বছর ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে প্রথমবার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, প্রত্যেকে এই পরিকল্পনার সুফল পাবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি স্পষ্ট করতে চাই। এটা সাহায্য বা দাতব্য কিছু নয়। এটা হলো বিনিয়োগ। এতে প্রত্যেকে উপকৃত হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই প্রকল্প গণতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে অংশীদারত্বে দেশগুলোকে সুনির্দিষ্ট সুফল পাওয়ার সুযোগ করে দেবে।

গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী, মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামো প্রকল্প গ্রহণে তহবিল গঠনে ৫ বছরে ৬০ হাজার কোটি ডলার সংগ্রহে জি-৭ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

মঞ্জুরি, ফেডারেল তহবিল ও বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি ডলার তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার তোলার ঘোষণা দিয়েছে।

এই উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান বাড়ানো, লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি ত্বরান্বিত করবে। উল্লেখযোগ্য কিছু উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে—অ্যাঙ্গোলায় সৌরবিদ্যুৎচালিত প্রকল্প গ্রহণ, সেনেগালে টিকা উৎপাদন কারখানা নির্মাণ, সিঙ্গাপুর থেকে মিসর ও হর্ন অব আফ্রিকা হয়ে ফ্রান্স পর্যন্ত ১ হাজার ৬০৯ কিলোমিটার সাবমেরিন টেলিযোগাযোগ কেব্‌ল স্থাপন।

চীনের উচ্চাভিলাষী বিআরআইয়ের পাল্টা উদ্যোগ হিসেবে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে বিআরআই প্রকল্প গ্রহণ করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং। এর অধীনে অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান দেশগুলোকে বন্দর, সড়ক ও সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করা হচ্ছে।

ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন বলেন, সর্বশেষ এই প্রকল্পের লক্ষ্য বিশ্বের কাছে একটি ইতিবাচক শক্তিশালী বিনিয়োগ প্রণোদনা উপস্থাপন করা। এতে উন্নয়নশীল বিশ্বে আমাদের অংশীদারদের দেখানো যাবে যে তাদের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে।

এর আগে গত বছর ব্রিটেনে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে প্রথমবার অবকাঠামো পরিকল্পনাটি তোলা হয়েছিল। তখন এর নাম ছিল ‘বিল্ড ব্যাক বেটার ওয়ার্ল্ড’। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আনা এই পরিকল্পনা অগ্রগতির অভাবে হোঁচট খায়। প্রকল্পটি পিজিআইআই নাম দিয়ে এবারের সম্মেলনে পুনরুজ্জীবিত করা হয়।