কুখ্যাত সার্ব নেতা রাদোভান কারাদজিচের সাজা বেড়েছে। এবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
২০ বছর আগে সাবেক যুগোস্লাভিয়ার জাতিগত যুদ্ধে স্রেব্রেনিকাতে গণহত্যা চালানোর দায়ে রাদোভানকে গতকাল বুধবার এই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত অবস্থিত। এই আদালত যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য রাদোভানকে দোষী সাব্যস্ত করে এই দণ্ডাদেশের রায় দেন।
৭৩ বছর বয়স্ক রাদোভান ১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের পার্লামেন্ট স্পিকার ছিলেন। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিভক্ত সার্বিয়ার বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুগোস্লাভিয়া ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি তাঁর রায়ে বলেন, বলকান যুদ্ধের সময় ১৯৯৫ সালে স্রেব্রেনিকাতে গণহত্যার বিষয়ে রাদোভান পুরোপুরি অবহিত ছিলেন। তাঁর নির্দেশেই তৎকালীন জাতিসংঘের নিরাপত্তা জোনের আওতায় স্রেব্রেনিকাতে গণহত্যা চালিয়ে আট হাজার মুসলমান পুরুষকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া ৪৪ মাস ধরে বসনিয়ার শহর সারাইভোকে অবরুদ্ধ করার দায়েও তাঁকে দায়ী করা হয়।
যুদ্ধাপরাধী রাদোভানকে ২০০৮ সালে বেলগ্রেড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে হেগ শহরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আওতায় আনা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০১৬ সালে রাদোভান কারাদজিচকে ৪০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তাঁর আইনজীবীরা শাস্তি হ্রাসের জন্য আপিল করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের যুগোস্লাভিয়া ট্রাইব্যুনাল এই আপিল গ্রহণ করেননি; বরং যুগোস্লাভিয়া ট্রাইব্যুনালের আপিল বিভাগ যুদ্ধাপরাধী রাদোভানের অপরাধগুলো পুনরায় তদন্ত করে তাঁর ৪০ বছরের সাজা অত্যন্ত কম ও ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলে মত দেন। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।