ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা অবশেষে করোনা অনুদান, ঋণ ও বাজেটে কীভাবে এবং কত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হবে, তা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেন। ১৭ জুলাই শুক্রবার ব্রাসেলসের ইইউ সদর দপ্তরে এই সভা শুরু হয়ে মঙ্গলবার সকালে শেষ হয়েছে।
ইউরোপের সব দেশ করোনা সংক্রমণের কারণে প্রাণহানিসহ অর্থনৈতিকভাবে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের দেশ স্পেন, ইতালিতে করোনা সংক্রমণের কারণে সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে।
ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতারা শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯০ ঘণ্টারও বেশি আলোচনা করে করোনাবিষয়ক ঐতিহাসিক সংকটে নিজেদের মধ্য পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। ৭৫ হাজার কোটি ইউরোর বিশাল অঙ্কের বাজেট এখন কোন খাতে কত বরাদ্দ হবে, তা নিয়ে সমঝোতা হয়েছে।
অর্থনীতি পুনর্গঠনের বিষয়ে কতটা অনুদান হিসেবে আর কতটা ঋণ হিসেবে বরাদ্দ হবে, এ নিয়েই আলোচনায় অচল অবস্থা দেখা দেয়। অনুদান হিসেবে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ ৫০ হাজার কোটি ইউরো প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করলেও, চার সদস্য দেশ বিষয়টিতে আপত্তি জানায়। ডেনমার্ক, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস ও অস্ট্রিয়ার নেতারা এই ঋণমুক্ত অনুদান আরও কমানোর পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন। তা ছাড়া দক্ষিণের সদস্য দেশগুলো চাকরি ও পেনশন বিষয়ে সংস্কারের দাবি তোলে।
অবশেষে সদস্য দেশগুলো করোনার সংকটের পুনর্গঠনের জন্য ৩৯ হাজার কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে আর বাকি অর্থ ঋণ হিসেবে বরাদ্দের বিষয়ে সম্মত হয়। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ছয় বছরব্যাপী বাজেট নিয়েও শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নেতারা ২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ছয় বছরব্যাপী ইইউ বাজেট অনুমোদন করেছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এই বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে আমরা যে এক হতে পেরেছি, তা বিস্ময় এবং আজ ইউরোপের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন বলে জানিয়েছেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসা ভন ডের লেয়ন।