জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বলেছেন, বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি রক্ষা করা যায় কি না, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং ইরানের নেতাদের এ ব্যাপারে কোনো একটি বিষয় বেছে নেওয়ার ‘এখনই সময়’। আল-জাজিরার এক অনলাইন প্রতিবেদনে আজ রোববার এ খবর জানানো হয়েছে।
এদিকে পারমাণবিক চুক্তি রক্ষার প্রসঙ্গে টেনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুলাহিয়ান বলেন, নমনীয়তা দেখানোর বিষয়টি এখন পুরোটাই নির্ভর করছে পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর। ‘বল আর তাদের কোর্টে নেই’ জানিয়ে হোসেইন আমির আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্দী বিনিময়ে প্রস্তুত রয়েছে ইরান।’
পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ইরানসহ চুক্তির বাকি পক্ষগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় কয়েক মাস ধরেই আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পাঁচ দেশ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন পারমাণবিক কর্মসূচিতে নজরদারির শর্তে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
বার্ষিক মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের ওলাফ শলৎজ বলেন, ইরান পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে গত দশ মাসে অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য যেসব বিষয় প্রয়োজন, তার সবই এখন আলোচনার টেবিলে। এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান তাঁর। তবে ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থার সদস্যদের পরিদর্শন বন্ধ করায় ইরানের সমালোচনা করেন তিনি।
ওলাফ শলৎজ বলেন, ‘আমাদের সমঝোতায় উপনীত হওয়ার সুযোগ এসেছে, যার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা সম্ভব। এ ছাড়া আমরা যদি দ্রুত সমাধানে পৌঁছাতে পারি, তাহলে এই আলোচনাও ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। ইরানের নেতৃত্বের সামনেও একটি সুযোগ এসেছে। এখনকার এই মুহূর্তটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার।’
২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামের একটি চুক্তিতে পৌঁছায়। চুক্তি মোতাবেক ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। শর্ত মেনে চলার বদলে সে সময় ইরানের ওপর আরোপ করা বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
পরে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তবে হোয়াইট হাউস জো বাইডেনের দখলে আসার পর থেকেই পুরোনো ওই চুক্তিতে ফেরার কথা বলে আসছেন তিনি। এ লক্ষ্যে বিশ্বশক্তিগুলো অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ভিয়েনার ওই আলোচনায় পরোক্ষভাবে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও অংশ নিচ্ছেন।