ইতালিতে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে। ইতালি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত প্রথম দেশ, যেখানে করোনায় এই বিপুলসংখ্যক লোকের মৃত্যু হলো। গতকাল শুক্রবার দেশটিতে নতুন করে আরও ২৪৩ জন মারা গেছে। এর আগের দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৭৪ জন।
বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, ইতালিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ২০১ জন। প্রতিদিন নতুন করে সংক্রমিত হওয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমে গতকাল সংক্রমিত হন এক হাজার ৩২৭ জন। সংক্রমিত মানুষের মোট সংখ্যা দুই লাখ ১৭ হাজার ১৮৫ জন।
ইতালির স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, বিভিন্ন এলাকায় বিধি নিষেধ শিথিল করা হচ্ছে। তবে একজন চিকিৎসক মিলান শহরকে করোনা সংক্রমণের 'টাইম বোমা' বলে অভিহিত করেছেন।
করোনায় মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পর তৃতীয় অবস্থানে ইতালি। বুধবার যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ইতালির পর স্পেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ২৬ হাজার ছাড়িয়েছে।
ইতালিতে লকডাউনের পদক্ষেপ শিথিল করা হয়েছে। এই সপ্তাহে ইতালির মানুষ প্রথমবারের মতো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পরে ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন। তাঁরা নিজ নিজ অঞ্চলের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছেন, তবে বন্ধুদের সঙ্গে নয়। ক্যাথলিক গির্জাগুলো ১৮ মে খুলে দেওয়ার প্রস্ততি চলছে। তবে অনুসারীদের অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ও মাস্ক পরতে হবে। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরও তাঁদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
স্কুল, সিনেমা ও বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ। বার ও রেষ্টুরেন্টগুলোতে লোকজনকে জুন মাসে বসতে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে লোকজন দূরত্ব বজায় না রেখে, মাস্ক না পরেই রাস্তাঘাটে চলাচল করছে। এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
মিলানের সাক্কো হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের প্রধান মাসিমো গাল্লি স্থানীয় লা রিপাবলিকা পত্রিকাকে বলেন, এটা স্পষ্ট যে লকডাউন শিথিল করার বিষয়টি সমস্যা তৈরি করবে। সংক্রমিত অনেকেই আবার আক্রান্ত হচ্ছেন।
করোনাভাইরাস কমিশনার অ্যাঞ্জেলো বররেলি জনগণকে সতর্ক করেছেন, ভাইরাসটির উপসর্গ আবার দেখা দিলে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কঠোর করা হবে।