করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ আঘাত হেনেছে ইউরোপজুড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইউরোপের মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবিসিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, ইউরোপে করোনা সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুব চিন্তিত। জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামী মার্চ মাস নাগাদ ইউরোপে পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড হতে পারে।
হ্যান্স ক্লুগ বলেন, মাস্ক পরার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা জরুরি কাজে লাগতে পারে। ইতিমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ করোনা শনাক্তের উচ্চ হারের কথা বলেছে। এ ছাড়া জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে সর্বাত্মক ও আংশিক লকডাউনের ঘোষণাও দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে সতর্কতার কথা বলা হয়েছে।
হ্যান্স ক্লুগ আরও বলেছেন, শীতের মৌসুমের পাশাপাশি অপর্যাপ্ত টিকাদান ও অধিক সংক্রামক করোনার ডেলটা ধরনের আঞ্চলিক আধিপত্যের কারণে করোনা ছড়িয়েছে বেশি। জরুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি, টিকা গ্রহণের হার বাড়ানো ও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করতে পারে।
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কোভিড-১৯। এ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কী করতে হবে, তা আমাদের জানা।’
ক্লুগ আরও বলেন, বাধ্যতামূলক টিকাদান ব্যবস্থাকে শেষ অবলম্বন হিসেবে দেখা উচিত, তবে বিষয়টি নিয়ে আইনি ও সামাজিক বিতর্ক করা সময়োপযোগী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী সোমবার থেকে ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়া পুরোপুরি লকডাউন শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে দেশটিতে যাঁরা করোনার টিকা নেননি, তাঁদের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেছেন, দেশটিতে পূর্ণ লকডাউন ২০ দিন চালু থাকবে। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা নিতে আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে। ইউরোপের আরেক দেশ স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হেগার আগামীকাল থেকে টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। চেক প্রজাতন্ত্রও বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি করেছে। নেদারল্যান্ডস আংশিক লকডাউন শুরু করেছে। জার্মানিও টিকা না নেওয়া লোকজনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে সম্মত হয়েছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যে এক দিনে ৪৪ হাজার ২৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটির সরকার ক্রমাগত বলে আসছে তাদের নতুন করে লকডাউনের কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধের পথে হাঁটতে হতে পারে।