কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থার মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের একমাত্র উপায় হচ্ছে কূটনীতি। ইউক্রেনের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সম্প্রতি দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ হবে কূটনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে। যুদ্ধ রক্তাক্ত, কিন্তু এর সমাধান কূটনীতিতেই দেখছেন তিনি।
জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা হবে। তবে তা কী উপায়ে হবে, জানি না। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে বা তাঁদের ছাড়া, একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এমনকি প্রেসিডেন্ট পর্যায়েও আলোচনা হতে পারে।’
ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এমন কিছু বিষয় আছে, যা শুধু আলোচনার টেবিলে পৌঁছানো যায়। আমরা চাই, সবকিছু ফিরে আসুক (আগে যেমন ছিল), কিন্তু রাশিয়া তা চায় না। আলোচনার ফলাফল বৈঠকের সময় অনুসারে ভিন্ন হতে পারে, তবে তা ইউক্রেনের জন্য ন্যায্য হতে হবে।’
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি সম্পর্কে একটি নথির কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি মস্কো ছাড়া ইউক্রেনের বন্ধু ও অংশীদারদের দিয়ে স্বাক্ষরিত হবে। একই সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
রাশিয়ার একটি সংবাদ সংস্থার মতে, গত ২২ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে শেষ আলোচনা হয়েছিল।
গতকাল শুক্রবার রাতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বন্দরনগরী মারিউপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানাটির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজভস্তালের ভূগর্ভস্থ যে জায়গাগুলোয় জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল, সেগুলো এখন রুশ সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।’ মোট ২ হাজার ৪৩৯ জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন, মারিউপোল ও ইস্পাত কারখানাটি ‘পুরোপুরি মুক্ত’ হয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিও বার্তায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অভিযোগ করেন, রুশ সেনাবাহিনী দনবাসের শিল্পাঞ্চল পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, মস্কো হামলা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে বোমা হামলা চালাচ্ছে। দনবাস নরক হয়ে উঠেছে। হামলায় সেভারোদনেস্ক এলাকায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন।
জেলেনস্কি আবারও রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলে বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ইউক্রেনীয়দের হত্যার চেষ্টা করছে। যত বেশি সম্ভব ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।