ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর দক্ষতা একেবারেই সমীহ জাগাতে পারেনি বলে দাবি করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, গোয়েন্দা তথ্য ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা আছে। যুদ্ধক্ষেত্রে নজিরবিহীন কৌশলগত ব্যর্থতা সেটা আরও ত্বরান্বিত করেছে। খবর বিবিসির।
এ যুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়েছে রুশ বাহিনী, যা বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে। এতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সেনা হারানোর পাশাপাশি রাশিয়ার বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্রও ধ্বংস হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অরিক্স নামের একটি পোর্টালের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে ৬৭৫টি পদাতিক যুদ্ধযান হারিয়েছে রাশিয়া। ট্যাংক হারিয়েছে ৬১২টি। সাঁজোয়া যুদ্ধযান হারিয়েছে ৩৪৭টি। ১৬৩টি সেলফ-প্রোপেলড ও টউড কামান ধ্বংস হয়েছে। আর্মারড পার্সোনেল ক্যারিয়ার হারিয়েছে ১০৮টি।
এ ছাড়া রাশিয়া এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ড্রোন হারিয়েছে ৫৮টি। ৩৯টি হেলিকপ্টার ও ২৬টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস হয়েছে ৬টি।
রুশ সমরাস্ত্রের এই ক্ষয়ক্ষতির নির্ভরযোগ্যতার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিও ও ছবি দেখে এসব ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন নিয়মিত প্রতিপক্ষের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য দিয়ে আসছে। তবে এ ক্ষেত্রে একে অপরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দেখানোর চেষ্টা করে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে নজর রাখা পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা বিস্মিত। তাঁদের দাবি, পেশাদারি, নতুন প্রযুক্তি আত্তীকরণ ও নতুন যুদ্ধকৌশলে দীক্ষিত অন্তত কিছুটা হলেও উন্নতি করা একটি বাহিনী হিসেবে রুশ বাহিনীকে দেখা হয়। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে সাবেক রেড আর্মির বিবর্ণ চেহারাই ফুটে উঠেছে।
বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনীর আক্রমণেও একই ধরনের ভুল দেখা যাচ্ছে। যোগাযোগ ও সরঞ্জামের মতো আধুনিক যুদ্ধের প্রধান উপাদান অদক্ষ হাতে পরিচালনা করা হয়েছে। সর্বোপরি, অপ্রত্যাশিতভাবে এ সংঘাতে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়া একটি সেনাবাহিনী ভুলগুলো থেকে সামান্যই শিক্ষা নিয়েছে বলে মনে করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকেরা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার পাশাপাশি উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ দিক থেকে স্থল অভিযান শুরু করে রাশিয়া। পরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে উত্তর দিক থেকে সেনা সরিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে হামলা জোরদার করে রুশ বাহিনী।