ইউরোপে যুদ্ধ চান না বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে মস্কো। তবে এর উল্টোটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে ঘিরে এখনো সামরিক উপস্থিতি জোরদার করছে রাশিয়া। খবর আল জাজিরার।
ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েন নিয়ে ইউরোপে উত্তেজনা যখন চরমে, তখন রাশিয়ার সেনা সরানোর ঘোষণা আশা জাগিয়েছিল পশ্চিমাদের মনে। তবে রাশিয়ার কথা অনুযায়ী আদৌ এমনটি হচ্ছে না বলে পরে দাবি করে ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই আবার ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলার জন্য দায়ী করা হচ্ছে মস্কোকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এসএসএনবিসির সঙ্গে এক আলাপচারিতায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘রাশিয়া এক কথা বলে, আরেকটা করে। আর আমরা তাদের সেনা সরিয়ে নেওয়ার মতো কিছু দেখিনি।’
একই কথা ন্যাটোরও। রুশ সেনা ও ট্যাংকগুলো সামনে-পিছে করা সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রমাণ করে না বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক আলোচনায় যোগদানের আগে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, রাশিয়া তাদের সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং আরও সেনা পথে রয়েছে। তাই, এখনো পর্যন্ত সংকট কমছে না।’
জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, রাশিয়া যে সেনা সরিয়ে নিতে ব্যর্থ তার প্রমাণ স্যাটেলাইট থেকে নেওয়া ছবির মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারবে ন্যাটো। উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক তত্পরতা শুরুর যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে তার সঙ্গে এটি সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ইউক্রেন সীমান্ত থেকে রুশ সেনা সরানোর ঘোষণা প্রথম আসে গত মঙ্গলবার। পরে বুধবার মস্কো জানায়, ক্রিমিয়া থেকেও আরও সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানসহ সামরিক সরঞ্জাম ক্রিমিয়া থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে ন্যাটোর দাবিকে ভুল বলে আখ্যা দিয়েছে ক্রেমলিন। আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার পশ্চিমে মোতায়েন করা সেনারা তাঁদের স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে যাবে।
দীর্ঘ সময় ধরে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। পশ্চিমাদের দাবি, দেশটিতে হামলা চালাতেই মস্কোর এ পদক্ষেপ। এমন দাবি নাকচ করে রাশিয়া বলে আসছে, হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। তবে ন্যাটোতে যোগ দিতে ইউক্রেনের তত্পরতা নিয়ে মাথাব্যথা রয়েছে। ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে রাশিয়া।