ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে বলে ইঙ্গিত করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুই পক্ষের আলোচনার পর এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, আলোচনা বাস্তবসম্মত পথে আছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রুশ বাহিনী। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় আলোচনা হলেও তেমন একটা অগ্রগতি দেখা যায়নি। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার অনলাইনে আবারও দুই পক্ষের আলোচনা হয়।
এরপর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘বৈঠক চলবে। আমাকে জানানো হয়েছে আলোচনা আগের চেয়ে বেশি বাস্তবসম্মত অবস্থায় এগোচ্ছে। তবে আলোচনায় ইউক্রেনের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।’
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, ধারণাকৃত সময়ের আগেই যুদ্ধ শেষ হতে পারে। তাঁরা মনে করেন মে মাস পর্যন্ত যুদ্ধ গড়াতে পারে। কারণ, ওই সময়ের মধ্যে রাশিয়ার রসদ কমে যাবে। যুদ্ধে নতুন সেনা যুক্ত করতে পারবে না দেশটি।
সম্প্রতি সম্ভাব্য সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়ে জেলেনস্কি বলেছিলেন, ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ইউক্রেনের আর নেই।
অভিযান শুরুর আগে থেকেই রাশিয়া বলে আসছে, তারা কোনোভাবেই চায় না যে প্রতিবেশী ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিক। পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণকে একটি হুমকি হিসেবে দেখে থাকে রাশিয়া। প্রতিবেশী ইউক্রেনে হামলার অজুহাত হিসেবে যেসব কারণের কথা রাশিয়া বলছে, তার মধ্যে অন্যতম কিয়েভের ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা।
আজ বুধবার রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে আবারও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। আজ মার্কিন কংগ্রেসেও ভার্চ্যুয়ালি ভাষণ দেবেন জেলেনস্কি।
এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলারুশের গোমেলে দুই দেশের প্রতিনিধিরা প্রথমবার আলোচনায় বসেন। পাঁচ ঘণ্টা চলে সেই আলোচনা। এরপর ৩ মার্চ বেলারুশের বেলোভেজসকায়া পুশচায় দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। ওই বৈঠক থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য মানবিক করিডর চালুর চুক্তি করে ইউক্রেন ও রাশিয়া। পরে ৭ মার্চ বেলারুশের ব্রেসট অঞ্চলে তৃতীয় দফা বৈঠক হয়। ১০ মার্চ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা তুরস্কের আনাতোলিয়ায় একটি কূটনৈতিক ফোরামে আলোচনা করেছেন।