উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ আজ বুধবার লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন। দীর্ঘদিনের সঙ্গী স্টেলা মরিসের সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছেন তিনি। এই জুটির দুই সন্তান আছে। লন্ডনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ওই কারাগারে দুজন সরকারি সাক্ষী ও দুজন নিরাপত্তারক্ষী মিলে অতিথি মোটে চারজন।
স্টেলা মরিসের বিয়ের পোশাকের ডিজাইন করছেন শুরু থেকেই অ্যাসাঞ্জের সমর্থক জনপ্রিয় ব্রিটিশ ডিজাইনার ভিভিয়েন ওয়েস্টউড। অ্যাসাঞ্জের বাবা ও পূর্বপুরুষ স্কটল্যান্ডের হওয়ায় বিয়েতে অ্যাসাঞ্জ পরবেন সামরিক ধাঁচে তৈরি স্কার্টের মতো স্কটল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাক। এটিরও ডিজাইনার ভিভিয়েন ওয়েস্টউড।
গত বছরের নভেম্বরের শুরুতে বন্দী অ্যাসাঞ্জকে বাগদত্তা স্টেলা মরিসকে কারাগারে বিয়ে করার অনুমতি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। ১৪ মার্চ তাঁদের বিয়ের দিনক্ষণ জানানো হয়। যুক্তরাজ্যের বিবাহ আইন ১৯৮৩-এর আওতায় কারাগারে বিয়ের অনুমতি পেয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। সম্পূর্ণ নিজ খরচেই বিয়ে করতে হচ্ছে তাঁদের।
বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর স্টেলা মরিস বলেছিলেন, ‘জুলিয়ান বিয়ের জন্য মুখিয়ে আছে, কারণ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করার অনেক দিন পর অবশেষে আমাদের পরিণয় হচ্ছে। সে বিদেশি একটি শক্তির (যুক্তরাষ্ট্র) ইশারায় এখন বন্দী। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও গঠন করা হয়নি। এটা সম্পূর্ণরূপে একজনের জন্য অসম্মানজনক।’
২০১১ সালে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী দলে যোগ দেন স্টেলা মরিস। অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে সেবারই প্রথম দেখা হয় তাঁর। এরপর প্রায় প্রতিদিন ইকুয়েডর দূতাবাসে গিয়ে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে দেখা করতেন। এভাবে তাঁদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া তৈরি হয়। ২০১৫ সালে একে অপরের প্রেমে পড়েন। এর দুই বছর পর বাগদান সম্পন্ন হয়। ইকুয়েডর দূতাবাসে থাকাকালেই গর্ভধারণ করেন তিনি। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ও স্টেলা মরিস যুগলের দুই সন্তান। অবশেষে কারাগারে এই যুগলের বিয়ে হচ্ছে।
মার্কিন গোপন নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দেওয়া ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত গুপ্তচরবৃত্তির আইনে করা মামলার আসামি। ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে জামিনের শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাজ্য পুলিশ। তখন থেকে বেলমার্শ কারাগারে বন্দী তিনি।