আদালতে মার্কিন আইনজীবী

অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়াতেই সাজা খাটতে পারবেন

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
ছবি : রয়টার্স

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করায় যুক্তরাজ্যের উচ্চ আদালতে গত বুধবার আবেদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাসাঞ্জের ‘গুরুতর ও স্থায়ী মানসিক অসুস্থতার’ কোনো ইতিহাস নেই। খবর দ্য গার্ডিয়ান–এর।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের মার্কিন সামরিক নথি প্রকাশ করেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০ সালে এসব নথি প্রকাশের ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

মার্কিন কর্তৃপক্ষ যুক্তরাজ্যের বিচারকদের বলেছে, যদি তাঁরা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তর করতে সম্মত হন, তবে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা তাঁর জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় যেকোনো মার্কিন কারাগারে সাজা ভোগ করতে পারেন। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের একটি নিম্ন আদালত এক দশক আগে গোপন মার্কিন সামরিক নথি প্রকাশের জন্য অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণের মার্কিন অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আদালত বলেন, উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো যাবে না। অ্যাসাঞ্জের বর্তমান মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করতে পারে, এ কারণ দেখিয়ে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন নাকচ করে দেন লন্ডনের একটি আদালত। জেলা জজ ভ্যানেসা বারাইটসার ওল্ড বেইলি আদালতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

অ্যাসাঞ্জ দোষী সাব্যস্ত হলে অস্ট্রেলিয়া তাঁকে গ্রহণ করবে কি না, বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ড

ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লন্ডনের হাইকোর্টে আপিল করে মার্কিন সরকারের আইনজীবী বুধবার বলেছেন, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মানসিক পরিস্থিতি এতটা নাজুক নয় যে মার্কিন বিচার বিভাগের মুখোমুখি হতে পারবেন না।

আইনজীবী জেমস লুইস বলেন, অ্যাসাঞ্জের ‘গুরুতর ও স্থায়ী মানসিক অসুস্থতার’ কোনো ইতিহাস নেই। এ ছাড়া তিনি এতটা অসুস্থ নন যে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন।

অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ড মার্কিন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, অ্যাসাঞ্জের মানসিক ব্যাধি ও আত্মহত্যার ঝুঁকির তীব্রতা হ্রাস করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের মার্কিন সামরিক নথি প্রকাশ করেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০ সালে এসব নথি প্রকাশের ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে অ্যাসাঞ্জের বিচার চলছে। তিনি ও তাঁর আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

আইনজীবী লুইস বলেছেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে অ্যাসাঞ্জকে বিচারের আগে উচ্চ নিরাপত্তার সুপারম্যাক্স কারাগারে রাখা হবে না বা কঠোর বিচ্ছিন্ন অবস্থার মধ্যে রাখা হবে না। অ্যাসাঞ্জ দোষী সাব্যস্ত হলে অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর সাজা ভোগ করার অনুমতি দেওয়া হবে।

ফিটজেরাল্ড আরও বলেছেন, অ্যাসাঞ্জ দোষী সাব্যস্ত হলে অস্ট্রেলিয়া তাঁকে গ্রহণ করবে কি না, বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।