গত সপ্তাহে করোনার টিকার ফলাফল জানায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এ টিকা ঘিরে মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হলেও এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্যের গৃহায়ণমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক বলেছেন, অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে কারও দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা–সম্পর্কিত যে তথ্য দিয়েছে, তা স্বাধীন নিয়ন্ত্রকেরা পর্যালোচনা করে দেখবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্কাই নিউজকে যুক্তরাজ্যের গৃহায়ণমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, অযাচিত উদ্বেগের কোনো কারণ রয়েছে। আমরা এখন নিয়ন্ত্রকদের কাছে চিঠি লিখে টিকা–সম্পর্কিত তথ্যের স্বাধীন মূল্যায়ন করতে বলেছি। আমাদের এখন স্বাধীন পর্যালোচনা করতে দিতে হবে।’
অক্সফোর্ডের টিকার ফলাফল নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম। বলা হয়েছিল, টিকাটি পরীক্ষার শেষ ধাপে ব্যাপক কার্যকারিতা দেখিয়েছে। করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ টিকা নতুন আশা জাগিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না, ফাইজার ও তাদের জার্মান সহযোগী বায়োএনটেকের করোনার টিকার চেয়ে এটি কম দামে পাওয়ার পাশাপাশি সহজে সরবরাহের কথাও শোনা যাচ্ছিল।
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সংবাদমাধ্যম অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে। টিকার কার্যকারিতার বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই বেশির ভাগ প্রশ্ন তোলা হয়।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের টিকা পরীক্ষার তিন ধরনের ফল জানায়। তারা বলে, টিকার মোট কার্যকারিতা হবে ৭০ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন কার্যকারিতা ৬২ শতাংশ আর সর্বোচ্চ কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ। এ ফলাফলের কারণ হচ্ছে টিকা পরীক্ষার সময় বিভিন্ন ধরনের ডোজ ভুল করে ব্যবহার করা হয়েছিল।
টিকা পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কিছু স্বেচ্ছাসেবীকে ভুল করে পরিকল্পনার চেয়ে অর্ধেক শক্তির ডোজ টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার ফলাফলে ওই ভুল ডোজই ভালো ফল দেখিয়েছে।
অনেক বিশেষজ্ঞ অবশ্য অক্সফোর্ডের টিকার প্রশংসাও করছেন। ডোজের মাত্রা আলাদা হলেও টিকার গবেষণা প্রকৃত পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়েছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পিটার ওপেনশ বলেন, ‘এখান থেকে একটা বার্তা পেতে পারি যে তিনটি সম্ভাবনাময় কোভিড টিকা শিগগিরই পেতে যাচ্ছি, যা জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে। তবে আমাদের চূড়ান্ত ও সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে এবং নিয়ন্ত্রকেরা তা কীভাবে পর্যালোচনা করেন, তা দেখতে হবে।’