গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অনুভূতি আছে। গত মাসে এমন দাবি করেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশলী ব্লেক লেমোইন। কিন্তু গুগল বলছে, ব্লেকের এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। ব্লেককে বরখাস্ত করা হয়েছে। খবর বিবিসির
ব্লেক গুগলের ভাষাপ্রযুক্তি নিয়ে নতুন তত্ত্ব হাজির করেন। তিনি বলেন, গুগল যে ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ফর ডায়ালগ অ্যাপ্লিকেশনস (ল্যাম্বডা) প্রযুক্তি তৈরি করেছে, তা সংবেদনশীল। তাই একে সম্মান করা উচিত। কিন্তু তাঁর এই তত্ত্ব স্বয়ং গুগল কর্তৃপক্ষই অস্বীকার করে। এ ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতের বিশেষজ্ঞরাও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অনুভূতির বিষয়টি মানতে রাজি হননি। গতকাল শুক্রবার গুগলের পক্ষ থেকে ব্লেককে চাকরিচ্যুত করা হয়। ব্লেক বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, তাঁকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
গুগলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ল্যাম্বডা নিয়ে ব্লেক লেমোইনের দাবির কোনো ভিত্তি নেই। বিষয়টি পরিষ্কার করতে কয়েক মাস ধরে গুগল ব্লেকের সঙ্গে কাজ করেছে। কিন্তু ব্লেক চাকরির নিয়ম ও নিরাপত্তানীতি ভঙ্গ করেছেন।
ল্যাম্বডা প্রসঙ্গে গুগলের দাবি, এটি যুগান্তকারী প্রযুক্তি। এটি অবাধে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারে। চ্যাটবট তৈরির জন্য তারা প্রোগ্রাম হিসেবে এটি কাজে লাগায়।
গত মাসে ব্লেক যখন দাবি করেন, ল্যাম্বডার মধ্যে মানুষের মতো অনুভূতি ও সচেতনতা দেখা যাচ্ছে। তাঁর এ মন্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। এ নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতের বিশেষজ্ঞরা আলোচনা শুরু করেন।
ব্লেক লেমোইন গুগলের রেসপনসিবল এআই টিমে কাজ করতেন। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, তাঁর কাজ ছিল গুগলের প্রযুক্তি কোনো বৈষম্যমূলক বা ঘৃণ্য বক্তব্য ব্যবহার করছে কি না, তা পরীক্ষা করা। তিনি দাবি করেন, ল্যাম্বডা আত্মসচেতনতা দেখিয়ে ধর্ম, আবেগ ও ভয় বিষয়ে কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারে।
এ থেকে তিনি ধারণা করেন, ল্যাম্বডার অভূতপূর্ব কথোপকথনের দক্ষতার পেছনে সংবেদনশীল মন রয়েছে। কিন্তু তাঁর দাবি গুগল প্রত্যাখ্যান করে এবং প্রতিষ্ঠানের গোপনীয়তা নীতি লঙ্ঘনের জন্য তাঁকে ছুটিতে রাখা হয়। ব্লেক লেমোইন তখন প্রমাণ হিসেবে ল্যাম্বডার সঙ্গে তাঁর ও আরেক ব্যক্তির কথোপকথনের বিষয়টি সামনে আনেন।
গুগলের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দায়িত্বশীল এআইয়ের বিকাশকে খুবই গুরুত্বসহ নেয় তারা। প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি নিয়ে কোনো কর্মকর্তার উদ্বেগ বিস্তৃতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। ল্যাম্বডা নিয়ে ১১ বার পর্যালোচনা করা হয়েছে।
তবে গুগলের এআই প্রযুক্তির সচেতনতার বিষয়টি ব্লেক লেমোইন একা সামনে আনেননি। এর আগে গত মাসে গুগলের আরেক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টকে একই কথা বলেছিলেন।