চীনের তৈরি একটি ড্রোনের নমুনা দেখছেন দর্শনার্থীরা। গত রোববার ইরাকে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে
চীনের তৈরি একটি ড্রোনের নমুনা দেখছেন দর্শনার্থীরা। গত রোববার ইরাকে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে

বিশ্বে প্রতিরক্ষা খাতে বছরে ব্যয় ২৪৪০ বিলিয়ন ডলার

  • সরকারগুলোর মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাতের উচ্চতর ঝুঁকি বাড়ছে।

  • সামরিক ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্বের পাঁচটি ভৌগোলিক অঞ্চলের দেশের সরকার এক দশকের বেশি সময় ধরে অস্ত্রভান্ডার গড়তে বার্ষিক ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে। এতে বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় ২ হাজার ৪৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির ৬০ বছরের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির চিত্র।

এসআইপিআরআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের পর থেকে ২০২২ ও ২০২৩ সালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি হতে দেখা গেছে। এর মাধ্যমে সামরিক ব্যয় বেড়ে যাওয়ার নতুন রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবারের মতো বিশ্লেষক ও গবেষকেরা সামরিক ক্ষেত্রে পাঁচটি ভৌগোলিক অঞ্চল—আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ওশেনিয়া এবং আমেরিকায় সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন।

এসআইপিআরআইয়ের সামরিক ব্যয় ও অস্ত্র উৎপাদন কর্মসূচি বিভাগের জ্যেষ্ঠ গবেষক নান তিয়ান এসব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাতের উচ্চতর ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তার বৈশ্বিক অবনতির সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির এমন অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটছে।

নান তিয়ান বলেন, বিভিন্ন দেশ সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। একই সঙ্গে তারা ক্রমবর্ধমান অস্থির ভূরাজনৈতিক এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি সরাসরি লড়াইয়ের ঝুঁকি তৈরি করছে।

সামরিক ব্যয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির মোট অর্ধেকই তারা করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক ব্যয় ২ দশমিক ৩ শতাংশ ও চীন ৬ শতাংশ বাড়িয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০২২ সালের তুলনায় গবেষণা, উন্নয়ন, পরীক্ষা ও মূল্যায়নে আরও ৯ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাশিয়া ২০১৪ সালে যখন প্রথম ইউক্রেনের ক্রিমিয়া ও পূর্ব দনবাসে আক্রমণ করে, তখন থেকেই সামরিক ব্যয় বাড়ানোর পথে হাঁটতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। তখন থেকে নতুন অস্ত্র তৈরি ও উন্নত সমর সক্ষমতার ওপর গুরুত্ব দিতে শুরু করে তারা।

চীন ২০২৩ সালে সামরিক খাতে ২৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচের ঘোষণা দেয়, যা আগের বছরের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। ২৯ বছর ধরে ক্রমাগত সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে চলেছে চীন। তবে চীন সবচেয়ে বেশি সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছিল ২০০৩ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে। সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির দিক থেকে এরপরই রয়েছে রাশিয়া, ভারত, সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্য।