জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে পর্যায়ক্রমে সরে আসার বিষয়ে দুবাই জলবায়ু সম্মেলনে একমত হয়েছে প্রায় ২০০ দেশ। এই প্রথম বিশ্বে এ ধরনের আহ্বান অনুমোদন দেওয়া হলো। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকে প্রধানত দায়ী করা হয়ে থাকে।
গত ৩০ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে শুরু হয় জাতিসংঘের কনফারেন্স অব পার্টিজ (কপ)-২৮ সম্মেলন। চূড়ান্ত চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের বিষয়ে একমত হতে ১৩ দিনের এ সম্মেলনের শেষ দিন গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গড়ায়।
শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে একমত হওয়ার ঘোষণা দিতে সক্ষম হয় আয়োজক দেশ আমিরাত। কপ-২৮ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট সুলতান আল-জাবের বলেন, ‘আপনারা এগিয়ে এসেছেন; আপনারা নমনীয়তা দেখিয়েছেন; আপনারা নিজেদের স্বার্থের চেয়ে অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে রেখেছেন।’
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের বিষয়ে চুক্তির প্রথম খসড়ার ভাষা কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে। পরে আরও শক্ত ভাষায় বলা হয়, ‘বিজ্ঞানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২০৫০ সাল নাগাদ গ্যাস নির্গমনে ভারসাম্য আনার লক্ষ্য (নেট জিরো) অর্জনে চুক্তিটি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে ন্যায্য, সুশৃঙ্খল ও ন্যায়সংগতভাবে সরে আসার এবং এই গুরুত্বপূর্ণ দশকে ব্যবস্থা গ্রহণ ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।’
সুলতান আল-জাবের আমিরাতের জাতীয় তেল কোম্পানির প্রধান। ফলে এই সম্মেলনে তাঁর ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন অনেক পরিবেশবাদী। এ ছাড়া সৌদি আরবের মতো তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির বিষয়টি চুক্তিতে রাখার বিরোধিতা করে আসছিল।
সুলতান আল-জাবের বলেন, পৃথিবী বদলে দেওয়ার মতো পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে নিজেদের এই ভূমিকার জন্য আমিরাত ‘ন্যায্যভাবে গর্বিত’। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সীমা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের একটি নতুন পথ খুঁজে বের করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। আমরা সে পথ খুঁজে পেয়েছি।’
জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের ২৮ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জীবাশ্ম জ্বালানির বিষয়টি চুক্তিতে উল্লেখ করা হলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ুবিষয়ক প্রধান ওপকে হোয়েকস্ট্রা বলেন, ‘৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সম্ভবত আমরা এখন জীবাশ্ম জ্বালানির শেষের শুরুতে পৌঁছাতে পেরেছি।’
ডেনমার্কের আলোচক ড্যান জর্গেনসেন এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন।