বিশ্বকাপ জেতার পর মেসিকে কেন ‘বিশত’ পরানো হয়েছিল

বিশ্বকাপের ট্রফি তুলে দেওয়ার আগে মেসিকে পরিয়ে দেওয়া হয় আরবের মর্যাদাপূর্ণ পোশাক ‘বিশত’
ছবি: রয়টার্স  

অপেক্ষার পালা শেষ। কয়েক মুহূর্ত বাদেই হাতে উঠবে বিশ্বকাপ ফুটবলের ট্রফি। কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে একে একে জয়ের মেডেল পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের। সব শেষে অধিনায়ক লিওনেল মেসির পালা। মেসি মেডেল পরলেন, সঙ্গে তাঁকে পরিয়ে দেওয়া হলো বিশেষ একটি কালো পোশাক, নাম ‘বিশত’।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফুটবলের রাজপুত্রের শরীরে পোশাকটি পরিয়ে দেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। এরপর ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর হাত থেকে ট্রফি নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন তিনি। এই সময়েও মেসির পরনে ছিল বিশত।

বিশত আরবের একটি ঐতিহ্যবাহী পোশাক। লম্বা এই পোশাকটি পরা হয় সাদা আলখাল্লার ওপর। এটি তৈরি করা হয় খুবই হালকা সুতা দিয়ে। থাকে খাঁটি সোনার কাজও। পোশাকটি মর্যাদার প্রতীক। সাধারণত শীর্ষ কর্মকর্তা—যেমন রাজনীতিক, শেখ ও সমাজের উচ্চমর্যাদার ব্যক্তিরা বিশত পরে থাকেন। শত শত বছর ধরে উপসাগরীয় দেশগুলোতে বিশেষ সব অনুষ্ঠানে পরা হয় পোশাকটি।

যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলাম শিক্ষার প্রভাষক মুস্তফা বেগ বলেন, ‘রাজপরিবারের লোকজন, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বর এবং সমাবর্তন অনুষ্ঠানের দিন স্নাতকেরা বিশত পরে থাকেন। তাই দেখা যাচ্ছে, খুবই অল্পসংখ্যক মানুষ এই পোশাকটি পরার সুযোগ পান।’

মেসিকে বিশত পরানোর কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে মুস্তফা বেগ বলেন, মেসিকে বিশত পরানো হয়েছিল তাঁকে সম্মান জানাতে। এটা সম্মানের একটি প্রতীক। আর বিশ্বকাপের মতো বড় আয়োজন হতে পারে না। তাই এমন একটি অনুষ্ঠানে মেসিকে বিশত পরিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে।

কাতার বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির মহাসচিব হাসান আল-থাওয়াদি বলেন, এই বিশ্বকাপ ছিল বিশ্ববাসীর সামনে আরব ও মুসলমানদের সংস্কৃতি তুলে ধরার একটি সুযোগ। এটা শুধু কাতারের নয়, আঞ্চলিক একটা উদ্‌যাপন ছিল। এটা ছিল মেসিকে নিয়ে উদ্‌যাপন।