দ্রুতগতির ট্রেনের জন্য চীনের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। দেশটির যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে এসব ট্রেন। এবার চীনে দ্রুতগতির যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। দেশটিতে এমন একটি দ্রুতগতির ট্রেন চালু করা হয়েছে, যেটি সমুদ্রের ওপর নির্মিত রেললাইনে ছুটে চলে।
চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফুজিয়ান প্রদেশের উপকূলে চলছে এই ট্রেন। ২৭৭ কিলোমিটার বা প্রায় ১৭২ মাইল দীর্ঘ রেললাইন যুক্ত করেছে ঝাংঝোউ, জিয়ামেন ও ফুজহোউ শহরকে। এই পথে চলাচলকারী ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৫০ কিলোমিটার বা প্রায় ২১৭ মাইল।
গত বৃহস্পতিবার এ পথে প্রথম দ্রুতগতির ট্রেন চালু হয়েছে। ওই দিন সকালে প্রাদেশিক রাজধানী ফুজহোউ শহর থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি।
এই রেলপথে ৮৪টি সেতু ও ২৯টি টানেল রয়েছে। সেই সঙ্গে ২০ কিলোমিটার বা প্রায় ১২ মাইল রেলপথ বানানো হয়েছে সমুদ্রের ওপরে। চীনে এটাই প্রথম সমুদ্রের ওপর দিয়ে ছুটে চলা বুলেট ট্রেন।
চায়না রেলওয়ে জানিয়েছে, সমুদ্রের ওপরে লাইন নির্মাণে পরিবেশবান্ধব ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বুদ্ধিমান রোবট।
২০১৬ সালে এই রেললাইনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ‘এইট হোরাইজন্টাল অ্যান্ড এইট ভার্টিক্যাল’ প্রকল্পের আওতায় এই রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, ফুজিয়ান প্রদেশের পর্বত-সমুদ্রবেষ্টিত ভূপ্রকৃতি এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের মূল ভূখণ্ডের সংযোগ রক্ষায় ফুজিয়ান প্রদেশ কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাইওয়ান প্রণালি পেরিয়ে মাত্র আড়াই মাইল দূরে জিয়ামেন শহরের অবস্থান। চীন বরাবর তাইওয়ানকে নিজেদের মূল ভূখণ্ডের অংশ মনে করে। এটা নিয়ে চীনের সঙ্গে তাইওয়ান ও পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধ রয়েছে।
সিনহুয়ার তথ্য বলছে, চলতি মাসের শুরুতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে তাইওয়ান ও ফুজিয়ানের মধ্যে আরও ভালো সংযোগ স্থাপনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।